বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালি নিয়ে চর্চা-আলোচনা থামার নামই নিচ্ছে না। বছরের শুরুতে তেতে উঠেছিল সন্দেশখালি (Sandeshkhali) ২ ব্লক। জমি দখল থেকে শুরু করে অত্যাচার, একাধিক অভিযোগ সরব হয়েছিলেন এলাকাবাসী। এবার উঠল মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির (Mid Day Meal Scam) অভিযোগ। ফের ব্লক অফিসের দিকেই আঙুল বিরোধীদের।
ব্লক প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিন কয়েক আগে এখানকার শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে মোট ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিড ডে মিলের বাসনপত্র সহ নানান সরঞ্জাম কেনার টাকা দেওয়া হয়ে। মোট ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে খবর। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার নিরিখে বিদ্যালয়গুলিকে (School) নূন্যতম ১০,০০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা দেওয়া হয়।
তবে সম্প্রতি বিদ্যালয়গুলির প্রধান শিক্ষকদের একাংশ দাবি করেন, নিজেদের পছন্দমতো দোকান থেকে মিড ডে মিলের বাসনপত্র ও সরঞ্জাম কিনতে পারেননি তাঁরা। বরং ব্লকের মিড ডে মিলের হিসাবরক্ষক শম্ভু শরণের নির্দেশে ধামাখালির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নিকট একটি নির্দিষ্ট সংস্থা থেকে কিনতে হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বেশি দামে সস্তার জিনিস বিক্রি করেছে উক্ত সংস্থা। আর এখানেই কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি(BJP)।
আরও পড়ুনঃ রাতের ঘুম উড়ল শিক্ষকদের! ভোটের আগেই বিরাট রায় কলকাতা হাই কোর্টের
প্রধান শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, এই মাসের শুরুতে মিড ডে মিল সংক্রান্ত হোয়্যাটস অ্যাপ গ্রুপে শম্ভু জানিয়ে দেন, যে সকল বিদ্যালয় মিড ডে মিলের বাসনপত্র ও সরঞ্জাম কেনার টাকা পেয়েছে, তাদের ৫ এপ্রিল উক্ত সংস্থা থেকে জিনিস কিনতে হবে। যদিও বেড়মজুর এফপি স্কুল এবং গাজিখালি এফপি স্কুল সেই দোকান থেকে সামগ্রী কেনেননি।
এই প্রসঙ্গে বেড়মজুর এফপি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, কোনও নির্দিষ্ট দোকান থেকে সরঞ্জাম কিনতে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাধ্য নয়। যেখান থেকে তাঁরা ন্যায্য মূল্যে পাবেন, সেখান থেকেই কিনবেন বলে জানান তিনি। জিনিস কেনা হয়ে গেলে ব্লকে তার কাগজ জমা দিয়ে দেওয়া হবে। অন্যদিকে গাজিখালি এফপি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের গলাতেও শোনা যায় খানিক একই সুর। নির্দিষ্ট কোনও সংস্থা থেকে কিনতে বাধ্য নই বলেন তিনি। পাশাপাশি জানান, বিদ্যালয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে সেই শম্ভুর দাবি, নজরদারির সুবিধার কারণে উক্ত সংস্থা থেকে কিনতে বলেছিলেন তিনি। বিডিও অরুণকুমার সামন্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, আগের বিডিও থাকাকালীন সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে দরপত্রের মাধ্যমে বাছা হয়েছিল। এবারও সেই সংস্থা অনুরোধ করে। তবে বেশি মূল্যে জিনিস বিক্রির বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি এও বলেছেন, বিদ্যালয়গুলি যেখান থেকে চান, সেখান থেকে জিনিস কিনতে পারেন।
এদিকে এই বিষয়টিকে ‘কাটমানি’ নেওয়ার সুযোগ বলে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্রর কথায়, ‘ঘুর পথে মিড ডে মিলের কাটমানি ব্লক প্রশাসনের মদতে তৃণমূল নেতাদের কাছে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিডিওর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন’। অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিখিলেশ গায়েনের কথায়, ‘সুযোগ পেলেই তৃণমূলকে দোষারোপ করে বিরোধীরা’। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগসূত্র নেই বলেও দাবি করেন তিনি।