বদলে যাচ্ছে নিয়ম! অষ্টম নয়, এবার দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত দেওয়া হবে মিড ডে মিল? সামনে বড় আপডেট

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলগুলিতে স্কুলছুটদের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে, তখন একেবারে ব্যতিক্রমী দুর্গাপুরের টাউনশিপ থানা এলাকার জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ। এই স্কুলের পড়ুয়াদের আরও বেশি স্কুলমুখী করে তুলতে স্কুলের মধ্যই আনা হয়েছে মিশনের পরিবেশ। সরকারি সাহায্যে সমস্ত সরকারি স্কুলগুলিতেই মিড ডে মিলের (Midday Meal) ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ব্যতিক্রম নয় এই স্কুলটিও।

দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত দেওয়া হবে মিড ডে মিল (Midday Meal)?

তবে এই স্কুলের রান্নার জন্য বাজার থেকে কেনা সবজি নয় ব্যবহার করা হয় নিজেদের স্কুলে চাষ করা সবজি। এইভাবে স্কুলের মধ্যে সবুজ বিপ্লব ঘটিয়ে রাজ্যকে নতুন দিশা দেখাচ্ছে, দুর্গাপুরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরকারি স্কুলটি। এই স্কুলের পড়ুয়ারা শুধু অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত নয় দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত  মিড ডে মিল (Midday Meal) পেয়ে থাকেন। গড়ে প্রত্যেক দিন প্রায় ৬০০ জন ছাত্রছাত্রী স্কুলের চাষ করা সবজি দিয়ে তৈরি মিড ডে মিলের খাবার খান।

স্কুলের মধ্যেই পড়ুয়ারা এই সমস্ত সবজি নিজেদের হাতে চাষ করেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মিড ডে মিল (Midday Meal) নিয়েও কম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। তাই সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে দুর্গাপুরের ফরিদপুর ব্লকের এই অখ্যাত স্কুলটি রাজ্যের অন্যান্য সমস্ত নামিদামি স্কুলগুলিকেও কিন্তু  নতুন দিশা দেখাচ্ছে। এই সবজি চাষের ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের সাহায্য করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

প্রতিদিন সকাল ১০ টার মধ্যে স্কুলে আসার পর প্রার্থনা শুরু হওয়ার আধঘন্টা আগে তারা একসঙ্গে স্কুলের বাগানে সবজির পরিচর্যা করেন। তারপর সেই সমস্ত সবজি দিয়েই মিড ডে মিলের (Midday Meal) রান্না করা হয়। জানা যাচ্ছে, এবছর শীতের মরশুমে আলু,পেয়াঁজ,ফুলকপি, বাঁধাকপি,পালং শাক, টমেটোসহ মোট কুড়ি রকমের সবজি চাষ করা হয়েছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়নুল হক জানিয়েছেন এবছর ২ হাজার ফুলকপি,১ হাজার বাঁধাকপি সহ নানা রকমের শাকসবজি চাষ করা হয়েছে।

চাষ করা হয়েছে সরষে-ও। তারা চাইছেন স্কুলের বাগান থেকে সবজির পাশাপাশি মিড ডে মিলের রান্নার তেলেরও যোগান দিতে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে যুক্ত করার জন্যই এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এমন প্রয়াস নিয়েছেন বলেই জানা যাচ্ছে। আর তার জন্য সমস্ত স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী সকলে প্রধান শিক্ষকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কলকাতা থেকে বহরমপুর! লাগাতার ফ্যাশন ডিজাইনারকে ধর্ষণের অভিযোগে জেল এই চিকিৎসকের

স্কুলের বাগানের এই সবজি চাষের দেখাশোনা করার জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে চারটি গ্রুপ রয়েছে। তারাই মিলেমিশে এই সমস্ত সবজি গাছগুলোর পরিচর্যা করে থাকেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেকটি সরকারি স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই স্কুলে সেদিক দিয়েও ব্যতিক্রমী। এখানে একেবারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের প্রতিদিন পেট ভরে মিড ডে মিলের খাবার খাওয়ানো হয়ে থাকে।

WBCHSE school teacher training

এছাড়া সোমবার দিনটাকেও বিশেষভাবে পালন করা হয়। এই দিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে, চক্ষু পরীক্ষার সঙ্গে রক্তদান শিবিরও করা হয়। সোমবার প্রত্যেকদিন দুপুরে পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও পাত পেড়ে খাওয়ানো হয়। অন্যদিকে গরমের ছুটিতে ছাত্র-ছাত্রীদের রং তুলি নিয়ে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়ালে ছবি আঁকানোর পাশাপাশি নাচ-গান এই সমস্ত কিছু অভ্যাস করানো হয়ে থাকে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন এই স্কুলের বাগানে অত্যন্ত ভালো মানের সবজি চাষ করা হয়ে থাকে। আর এই সমস্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটছে বলেই জানা যাচ্ছে।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর