বাংলাহান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, শিক্ষকদের থেকে বড় দাতা সমাজে খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাঁরা শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষাই দেন না, দেন না, দেন আদর্শ মানুষ হওয়ার শিক্ষাও। এমনই একজন শিক্ষিকা অবসরের সময়ে সমাজে নিজের অবদান রেখে গেলেন। পাশাপাশি, স্কুলকেও কিছু উপহার দিয়ে গেলেন। নিয়ম মেনেই ৩৩ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষ করবেন শিক্ষিকা শম্পা দাস সরকার।
আগামী ৩১ জানুয়ারি অবসর গ্রহণ করবেন মেদিনীপুর শহরের কর্ণেলগোলা শ্রী নারায়ণ বিদ্যাভবন বালিকা বিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকা। স্কুলে জীবন বিজ্ঞান পড়ান তিনি। ১৯৮৯ সালের ৩ নভেম্বর এই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন শম্পা দেবী। এ বার ৩৩ বছরের শিক্ষকতা জীবনে ইতি পড়বে। তাই চলে যাওয়ার আগে স্কুলকে উপহার-স্বরূপ কিছু দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
সেই মতো সিদ্ধান্ত নেন, স্কুলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করবেন। তাঁর কথায়, “আমি নিজে স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত। তবে নারী শিক্ষায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অস্বীকার করার জায়গাই নেই। তাই মেদিনীপুরের গর্ব বিদ্যাসাগরের মূর্তি বসানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলাম।” একইসঙ্গে ছাত্রীদের পুরস্কার তহবিলে ১ লক্ষ টাকাও তুলে দিতে চেয়েছেন তিনি।
তাঁর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি বসিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেই মূর্তি সম্প্রতি উন্মোচিত হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুর খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান দীনেন রায়, মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খাঁ প্রমুখ। এ দিন তিনি পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণী ও একাদশ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানাধিকারীদের এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তদের পুরস্কৃত করার কথাও ঘোষণা করেন।
এই মর্মে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার হাতে ১ লক্ষ টাকার চেকও তুলে দেন শম্পা দেবী। হাবিবপুরের বাসিন্দা শম্পা দাস সরকারের স্বামী ডঃ হরিপ্রসাদ সরকার গড়বেতা কলেজের অধ্যক্ষ। একমাত্র ছেলে আমেরিকায় থাকেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিন শিক্ষকতার পর একটু মুক্ত হব। রাজ্যের ও দেশের বাইরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখব। মাঝেমধ্যে অবশ্যই প্রিয় স্কুলে আসব।”