কলকাতার এই এলাকা থেকেই “ফান্ডিং” পাচ্ছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন! চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করল STF

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার মেটিয়াবুরুজ এলাকা থেকে বাংলাদেশি (Bangladesh) সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে (ABT) ফান্ডিং দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, এবিটি সদস্য মিনারুল শেখ এবং মহম্মদ আব্বাস আলিকে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাদা থেকে গ্রেফতার করেছে STF। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, মাটিয়াবুরুজ এলাকা থেকে অর্থ সাহায্য মিলছে।

কলকাতা থেকেই ফান্ডিং মিলেছে বাংলাদেশি (Bangladesh) সন্ত্রাসবাদীদের:

জানিয়ে রাখি যে, ২ মাস আগে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে আসাম STF-এর হাতে ধরা পড়ে মিনারুল শেখ এবং আব্বাস আলি। পরে ওই সংগঠনের নূর ইসলাম সহ বাংলাদেশি (Bangladesh) নাগরিক শাদ রবি সহ আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়। এরপর তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ করে STF। পাশাপাশি, STF আধিকারিকরা এটা জানার চেষ্টা করছিলেন যে, এই ক্ষয়প্রাপ্ত সংগঠনটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ফান্ডিং কোথা থেকে আসছে। এমতাবস্থায়, অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন থেকে একাধিক ই-ওয়ালেট পাওয়া গেছে। ই-ওয়ালেট সূত্রে খবর, এই অ্যাকাউন্টগুলি কেরালার বিভিন্ন ঠিকানায় খোলা হয়েছে। এছাড়াও, মুর্শিদাবাদের ঠিকানাও রয়েছে।

Militant organizations of Bangladesh getting "funding" from ​Kolkata.

এবিটি মেটিয়াবুরুজ থেকে ফান্ডিং পাচ্ছে: তদন্ত থেকে জানা গিয়েছে যে, কেরালায় কাজ করতে যাওয়া লোকজন মিনারুলের অ্যাকাউন্টে তাদের অর্থের কিছু অংশ পাঠাচ্ছে। এদিকে, STF আধিকারিকদের সন্দেহ হয়ে এই টাকা শুধু কেরল থেকে আসছে না। তারপরেই জিজ্ঞাসাবাদে নূর জানিয়েছে যে, কলকাতার মেটিয়াবুরুজ এলাকা থেকে তার কাছে টাকা আসত।সেখানে এবিটির প্রতি ঝুঁকে থাকা ব্যক্তিরা অর্থ দিচ্ছে। নূর তদন্তকারীদের জানায়, মিনারুল ও আব্বাস তার নির্দেশে ২০২৪ সালে মেটিয়াবুরুজ এলাকায় গিয়েছিল। সেই এলাকায় এই দুই সন্ত্রাসবাদীর পরিচিত একজন আগে থেকেই রয়েছে। তার সাথে যোগাযোগের পর তারা দুজনেই জানায় যে মুর্শিদাবাদে এবিটি পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: চিনকে “টাইট” দিতে এবার বড় অ্যাকশন! ভারতীয় সেনার শক্তি বাড়াবে ট্রাম্পের মাস্টারস্ট্রোক

মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য টাকা চাওয়া হয়: এমতাবস্থায়, সংগঠনের সদস্যদের বাড়িতে বা কারও বাড়ি ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসা গড়ে তোলা হচ্ছে এবং সেখানে প্রশিক্ষণ চলছে। কিন্তু জমি কিনে মাদ্রাসা বানানোর মতো অর্থ তাদের কাছে ছিল না। অন্যদিকে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে। এই কারণে বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে টাকা মিলছে না। তাই, নূরের পরামর্শে মিনরুল একটি প্যাড প্রিন্ট করে। তাতে লেখা আছে মাদ্রাসা নির্মাণে সাহায্য করতে হবে। এদিকে, মিনারুলের পরিচিত ও তার ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী টাকা নিয়ে আলোচনা করে ও তারা রাজি হয়। সূত্রের খবর, সেখান থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে তারা মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন। পরে আরও টাকা আসে।

আরও পড়ুন: ফের বাজিমাত আম্বানির! অধিগ্রহণ করলেন ৪৫ পুরনো বছরের ব্র্যান্ড, এই সেক্টরে বাড়বে দাপট

খাগড়াগড় বিস্ফোরণে টাকা পেয়েছিল জেএমবি: তদন্তে জানা গেছে, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সময়ে মেটিয়াবুরুজের অনেক ব্যবসায়ী জেএমবিকে অর্থ সাহায্য করেছিল। এদিকে, গোয়েন্দারা সন্দেহ করেছে যে, ওই এলাকাটি এবিটি প্রচারের জন্য টাকা সরবরাহ করছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সন্ত্রাসবাদীদের শক্ত ঘাঁটি। তিনি জানান, যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুষ্টির রাজনীতির কারণে পশ্চিমবঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে স্বর্গের মতো মনে করেছে। তাই STF এখানে যা আবিষ্কার করেছে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এদের শিকড় খুব গভীর এবং উপড়ে ফেলা যায় না। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন যে, তিনি এই বিষয়ে মন্তব্য করবেন না। কারণ এটি তাঁর এখতিয়ারে আসে না।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর