মাথায় হাত দুধ ব্যাবসায়ীদের, রপ্তানি না করতে পেরে ফেলতে হচ্ছে নর্দমায়

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দেশজুড়ে COVIED-19 জেরে সরকার ঘোষিত লকডাউন (lockdown) চলছে। আর জেরে চোখে অন্ধকার দেখছে বসিরহাট (basirhat) মহকুমার দুধ ব‍্যবসায়ীরা। এই মারণ ভাইরাসের জেরে মাত্র ৪ ঘন্টার জন‍্য খোলা থাকে কিছু মিষ্টির দোকান (sweets shop)। যার জেরেই মাথায় হাত বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া, মিনাখাঁ, হাসনাবাদ-সহ একাধিক ব্লকের সমস্ত দুধ ব‍্যবসায়ীদের। “প্রতিদিন লিটার লিটার দুধ ফেলে দিতে হচ্ছে নর্দমায়।”

corona virus 6

হাড়োয়া ব্লকের লাউগাছী গ্রামের (Village of Laugachi village in Harawa block) ঘোষপাড়ায় ৭৫টি পরিবারের প্রায় ৬০০ জন দুধ ব‍্যবসার সাথে জড়িত। বছরের অন‍্য সময় গুলিতে সকাল ও বিকাল মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার লিটার দুধ সরবরাহ করা হতো। প্রায় ৪০০টি গরু ও মোষ রয়েছে এই গ্রামে। ব্যাঙ্ক থেকে কৃষি লোন নিয়ে গরু কিনে চলে সংসার। প্রতিটি গরুর খাওয়া খরচ বাবদ খরচ হয় ৪০০ টাকা। গত একুশ দিন ধরে দুধ রপ্তানি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন দুধ নষ্ট হচ্ছে। আমূল, মেট্রো ডেয়ারি, রেড কাউ এর মতো একাধিক বেসরকারি সংস্থা গুলি আগের মতো প্রতিদিন দুধ না কেনায় সমস্যায় পড়েছে দুগ্ধ ব‍্যবসায়ীরা।

lockdown 2

আবার বসিরহাট, বারাসাত, যাদবপুর, ঘটকপুকুর-সহ একাধিক জায়গায় তারা এই দুধ বিক্রি করতে যেত। কিন্তু করোনা আতঙ্কে ও পুলিশি নাজেহালের থেকে ভয় পেয়ে তারা ঐ বাজার গুলিতে গিয়ে দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। সেই সঙ্গে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলা রাখার অনুমতি মিলেছে প্রশাসন মারফত। কিন্তু গ্রীষ্মের দুপুরের ঐ চড়া রোদে মিষ্টি কেনার লোকের বড়ই অভাব। যার ফলে দুগ্ধ জাত মিষ্টি তৈরী করা বন্ধ করে দিয়েছে বসিরহাট, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক ছোট-বড়ো মিষ্টির দোকান। যার প্রভাব সরাসরি পড়েছে ঘোষপাড়া গুলির গোয়াল ও খাটালে।

government not make right plan open milk market is ready to sell 730X365

পাশাপাশি করোনা আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে গবাদি পশুর খড়, ভূষি, ছোলার খোলার দামেরও বৃদ্ধি হয়েছে। লকডাউনের আগে ৫০ কেজি ভূষির দাম ছিল ১১০০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ১৪০০ টাকা হয়েছে। ছোলার খোলার দাম ছিল কেজি প্রতি ২৬ টাকা, তা বেড়ে হয়েছে ৩২ টাকা। মহিষের দুধ এক লিটারের দাম ৬০ টাকা ও গরুর দুধ লিটার প্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি করেন তারা। কিন্তু ক্রেতার অভাবে সেই দুধ যথাক্রমে ৩০ ও ২০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ‍্য হচ্ছেন গোপালকরা। প্রতিদিন একটি গবাদি পশুর লালন পালনের জন্য যে খরচ পড়ে, তা থেকে দুধ ও ছানা তৈরি করে উপার্জন করে তারা। কিন্তু গত একুশ দিন ধরে দুধ ও ছানা রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে ঐ গোয়ালারা। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মাদার ডেয়ারি, রেড কাউ সহ অনান্য দুগ্ধজাত সংস্থা তাদের উৎপন্ন দুধ কেনার ব্যবস্থা করুক। নচেৎ সংসারের টাকা খরচ করে গবাদি পশুদের বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। ঐ ব‍্যবসায়ীদের দাবি মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) এই সমস্যার বিষয়টি হস্তক্ষেপ করুক।

সম্পর্কিত খবর