বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তান বর্তমানে যে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেই একই রকম পরিস্থিতিতে ছিল শ্রীলঙ্কাও। দীর্ঘ সময় ধরে চলা আর্থিক দুর্নীতি ও খারাপ নীতির ফলে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখেছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থা এতটাই খারাপ হয় যে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয় শ্রীলঙ্কাকে। তারপর কেটে গিয়েছে একটা বছর। এখনও ধাক্কা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা।
এখনও অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। বিদ্যুৎ বিপর্যয় এখনও পুরোপুরি কাটেনি। ফলে শ্রীলঙ্কায় ব্যবসার অবস্থা শোচনীয়। মুদ্রাস্ফীতির উচ্চ হারের জেরে মানুষ এখনও ক্ষুধার্ত থাকছে। চিনের থেকে নেওয়া ঋণে আটকে অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল শ্রীলঙ্কার। তার উপর করোনা মহামারী-সহ অন্যান্য কারণে পুরোপুরি ধসে যায় দেশটি।
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির অনেক মিল রয়েছে। যেমন জ্বালানি সঙ্কটের ফলে বিদ্যুতের ব্ল্যাক আউট। দিনে ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছিল সেখানে। এখনও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ীদের উপর। সেখানে কাজকর্ম করাই কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ছোট ব্যবসাগুলি বেশি করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানে।
তবে শ্রীলঙ্কায় মুদ্রাস্ফীতির হার গত বছরের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। খাবারের ঘাটতি থাকায় জিনিসের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে রয়েছে। ফলে মানুষের দু’বেলা ঠিক মতো খেতে পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তথ্য অনুসারে, ৩৩ শতাংশ পরিবার উচ্চ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হয়েছিল।
৬৮ শতাংশ পরিবার খাদ্যগ্রহণ কমিয়ে বেঁচে ছিল। বর্তমানে সেখানে মুদ্রাস্ফীতির হার ৫০.৬ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় এখন ১ লিটার দুধের দাম ৪২০ টাকা। চালের দাম ২২৭ টাকা প্রতি কেজি। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা প্রতি পিস দরে। মুরগির মাংসের দাম ১৩১২ টাকা প্রতি কেজি। ১ কেজি আলুর দাম ৩৪১ টাকা এবং ১ কেজি টমেটোর দাম ৪১২ টাকা। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, আর্জেন্টিনা ও তুরস্কের পর সবচেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতির হার রয়েছে শ্রীলঙ্কায়।