বাংলাহান্ট ডেস্ক: টলি ইন্ডাস্ট্রিতে মিমি চক্রবর্তী (mimi chakraborty) ও নুহরত জাহানের (nusrat jahan) বন্ধুত্বের কথা এখন আর কারওরই অজানা নয়। একে অপরকে সর্বসমক্ষেই ‘বোনু’ বলে ডাকেন তাঁরা। কেউ কোনও ছবি, ভিডিও পোস্ট করলে অন্যজন কমেন্ট করবেনই। এমনকি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদের সামনে একসঙ্গে টিকটক করে বিতর্কেও জড়িয়েছেন দুজন।
তবে এহেন বন্ধুত্বেও কি এবার কোথাও লেগেছে প্রতিযোগিতার হাওয়া? করোনা আমফানের জোড়া দাপটে কোথাও কি নুসরতকে টেক্কা দিয়ে গিয়েছেন মিমি? উত্তর বলছে দুজনের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টই। লকডাউনের শুরু থেকেই নয় ভিডিও, নয় ফটোশুট নাহলে নিত্য নতুন রেসিপি বানিয়ে ইনস্টা হ্যান্ডেলে পোস্ট করছেন নুসরত। অপরদিকে প্রথমে কয়েকদিন টুকটাক কফি বানালেও তেমন ভাবে রান্নাঘরে ঢোকেননি মিমি।
এরপর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বার্তা দিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ। ভাইরাল হয় সেই ভিডিও। নুসরত তখনও আটকে রেসিপি, ফটোশুটে। তার দোসর হয় টিকটক। নেটিজেনরা বহুবার প্রশ্ন তুলেছেন যখন বসিরহাটের মানুষ খেতে পাচ্ছেন না তখন নুসরত সাংসদ হয়ে টিকটক করছেন কিকরে। উত্তরে অভিনেত্রী সাফ জানিয়েছেন যতই ট্রোল হোক না কেন টিকটক করা তিনি বন্ধ করবেন না।
মিমি এই সময়ে বজায় রাখেন তাঁর সাংসদ হিসাবে দায়িত্ব। নববর্ষে এইচআইভি পজিটিভ শিশুদের মুখে হাসি ফোটানো, তাদের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে লকডাউনে ভাইরাল ‘চা কাকুর’ সারা জীবনের দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি। এর মাঝে নুসরতের বাবার করোনা ধরা পড়ে। পরিবারের সঙ্গে তাঁকেও যেতে হয় কোয়ারেন্টাইনে। সেই সময়টা বাড়ি বসে লিপস্টিক লাগিয়ে সেজেগুজে ফটোশুট বা টিকটক করে সময় কাটিয়েছেন নুসরত। ফের শুরু হয় বিতর্ক।
এরপর কোয়ারেন্টাইন অবস্থা কাটলে বেহালার এক বৃদ্ধাবাসে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেন নুসরত। রমজান মাস শুরু হলে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন সাংসদ অভিনেত্রী। শোনেন তাদের অভাব অভিযোগ। নুসরতও বাড়ি থেকে ভিডিও বার্তায় জানান রমজান ও ইদের শুভেচ্ছা।
এরপর ২০ মে আমফানের তাণ্ডবের পরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় মিমি নুসরত দুজনেরই সাংসদ এলাকা। পালা পালা করে বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙর, যাদবপুর, গল্ফগ্রীন অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যবেক্ষণে যান মিমি। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। গাছ কাটতে ব্যস্ত শ্রমিকদের হাতে তুলে দেন বিস্কুট, জল। অপরদিকে আমফানের দুদিন পর বসিরহাট যান নুসরত। সেখানে মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন, তাদের সাহস জুগিয়ে অভিনেত্রী জানান, তিনি তাদের পাশে রয়েছেন।
প্রথমে মালঞ্চের মোড়ে দাঁড়িয়ে সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর পৌঁছান মিনাখা ও চৈতাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ত্রাণ শিবিরে। সেখানকার অবস্থা পরিদর্শন করেন। সকলকে কাপড় দিয়ে মাস্ক বানিয়েও পরতে শেখান নুসরত।
দুজনেই কমবেশি বাড়িতে থেকে বা রাস্তায় নেমে কাজ করলেও দাঁড়িপাল্লার ওজনে কে বেশি কে কম তা স্পষ্ট করে দিচ্ছেন নেটিজেনরাই। অনেকে মন্তব্য করেছেন, সাংসদ নির্বাচিত হলেও এখনও রাজনীতির প্যাঁচ পয়জার শেখা বাকি মিমি, নুসরত দুজনেরই।