বনের পথে প্রতিদিন ১৭ কিলোমিটার হেঁটে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা পৌঁছে দেন এই মহীয়সী
করোনা লকডাউনে যখন সারা ভারতের সব স্কুল বন্ধ ছিল, তখনও ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে প্রতিদিন স্কুলে গিয়েছেন এক শিক্ষিকা। আসলে তিনি যে স্কুলে শিক্ষকতা করেন সেখানের বেশিরভাগ মানুষই দারিদ্র্য সীমার নীচে। স্মার্ট ফোন না থাকার দরুন অনলাইন ক্লাস সম্ভাবনাই নেই। তাই তিনি রোজ পৌঁছে গিয়েছেন স্কুলে। লকডাউনে যানবাহন বন্ধ থাকায় তিনি প্রতিদিনই হেঁটে পৌঁছেছেন স্কুলে। তাও ১৭ কিলোমিটার বনের পথ ধরে।
এই মহীয়সী শিক্ষিকার নাম মিনি কোরম্যান। কেরালার মালাপ্পুরমের বাসিন্দা রোজ ১৭ কিলোমিটার বনের পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যান স্কুলে। এই পথে রয়েছে বাঘের ভয়ও। খবর সামনে আসতেই এই শিক্ষিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।
মিনি জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষিকা হিসাবে তিনি ঐ বিদ্যালয়ে যোগ দেন। করোনা লকডাউনের আগে সব ঠিকই ছিল, কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার পর এই নিম্নবিত্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া মিনির পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কারন ওই গ্রামের ছাত্র ছাত্রীদের স্মার্টফোন কেনার ক্ষমতাই নেই। তাই অনলাইন ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। মহামারির জন্য শিক্ষা থেমে থাকতে পারে না। তাই মিনি ফের স্কুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গণপরিবহন বন্ধ। তাই মিনিকে স্কুল যেতে হত বনের পথে ১৭ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে। যার মধ্যে ১ কিলোমিটার ছিল পাহাড়ের চড়াই। মিনি জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই তার দূরের স্কুল কলেজে পড়ার অভ্যেস তাই এই পথটা হেঁটে আসতে তার খুব একটা অসুবিধা হয় নি। ঘন বনের মধ্যে বন্য প্রাণীর দেখা পেয়েছেন বহুবার। কিন্তু ভয় পেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেনি।