বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহীদ দিবস (TMC Shahid Diwas)। এই দিনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা সর্বদাই তুঙ্গে থাকে। এবছর ৩০ বছরে পদার্পণ করেছে ২১ জুলাই শহিদ তৰ্পন অনুষ্ঠান। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। বিশাল জমায়েত। মহানগরীর বুকে ঢল জোড়াফুলের সমর্থকদের। অন্যদিকে ভিড়ের মধ্যেই হঠাৎ দেখা গেল তৃণমূলের অতি পরিচিত এক মুখ। যাকে দেখে ভিরমিও খেলেন অনেকে।
একুশের হাইভোল্টেজ সভার একেবারে শেষলগ্নে মঞ্চের কাছে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মুকুল রায়। সঙ্গেই দেখা গেল তার ছেলে শুভ্রাংশু রায়কেও। তবে তারা মঞ্চে উঠতে পেরেছিলেন কিনা তা অবশ্য জানা যায়নি। ক্যামেরার সামনেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি বাবা ছেলে কেউই। শুভ্রাংশু শুধু বলেন, ”বাবা তৃণমূলেই আছে!” মুকুলকে দেখে অনেকেই ‘থ’ সেখানে। তবে দলের অনেক নেতা কর্মীকেই আবার মুকুল রায়ের সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে সৌজন্য বিনিময় করতেও দেখা গেল।
জোড়াফুল না পদ্ম? কোন দলে রয়েছেন তিনি! এই নিয়ে জোর জল্পনা চলছিল কিছুদিন আগে। তবে আজ একেবারে তৃণমূলের শহীদ দিবসের সমাবেশে একবারে সাদা পাঞ্জাবী গায়ে জড়িয়ে পুত্র সমেত হাজির তিনি। তবে কিছুদিন আগেই অবশ্য নেতা বলেছিলেন,” বিজেপিতে ছিলাম, থাকবও! তৃণমূল ভবনে গিয়ে উত্তরীয় পরা ভুল হয়েছে। ”
প্রসঙ্গত, সক্কলকে চমকে দিয়ে এপ্রিল মাসে দিল্লি (Delhi) পাড়ি দিয়েছেন তৃণমূলের এই নেতা। সেখানে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেসব আর হয়নি। প্রায় দু সপ্তাহ দিল্লিতে থেকে ফিরে আসেন মুকুল।
একসময় মমতার পর দলে তার স্থান ছিল। বলতে হয় তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ছিলেন মুকুল রায়। তবে ২০১৫ সালে সকলকে চমকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। টানা কয়েক বছর সক্রিয়ভাবে বিজেপি নেতা হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে লড়াই করে কৃষ্ণনগর থেকে জয়লাভও করেন তিনি। তবে ভোটের ফল ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ফের ঘাসফুলে ফেরেন মুকুল।
এই সময় মকুলের বিধায়ক পদ বাতিলের দাবিতে সরব হয় বিজেপি। যা নিয়ে উত্তপ্ত হয় রাজনীতির অন্দর। কিন্তু কোনো অজানা কারনে এই সময় থেকেই আর সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়না মুকুলবাবুকে। সেই সময় তার করা তৃণমূল বিরোধী কিছু মন্তব্য নিয়েও শোরগোল পড়ে যায়। তবে শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন তাই ভুলবশত সেসব মন্তব্য করে ফেলেছিলেন বলেও সাফাই দেন মুকুল।
২০২১ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মুকুল। শারীরিকভাবেও অসুস্থতা চারা দেয়। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরেও স্নায়ুর সমস্যার জন্য তাকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেইসময় তার নানা পরীক্ষাও হয়। গত ফেব্রুয়ারী মাসে তার মাথায় চিপও বসানো হয়। এরপর এপ্রিলে ‘বিজেপিতে আছি’ দাবি করে আজ তৃণমূলের শহীদ সমাবেশে মুকুল। যা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।