বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতের (India) বুকে আবারও একবার বিতর্কের কেন্দ্রে হালাল এবং ঝটকা মাংস সংক্রান্ত বিষয়। রাজ ঠাকরের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মান সেনা বা এমএনএস এই হালাল এবং ঝটকা মাংসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার কথা ঘোষণা করেছে। শুধু তাই নয়, এমএনএস-এর পক্ষ এই মাংসের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদকে (Terrorism) যুক্ত করে প্রচার চালানো হচ্ছে। তাঁদের এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীদের কাছে পৌঁছে যায় মূলধন। তবে জানা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্রে প্রথম নয়, এর আগে কর্ণাটকেও এই ঝটকা এবং হালাল মাংস নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
হালাল কী? হালাল হলো পশু হত্যার এক বিশেষ পদ্ধতি। এবার হালাল করার পদ্ধতিটা কী? পশুর গলার সামনের দিকটা কাটা হয় এমনভাবে যাতে তার শিরদাঁড়ায় চোট না লাগে, তার মানে কাটা হয় গলা, শ্বাস নলি, জুগুলার ভেইন। পশুটি রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যায়, তারপর তাকে খাদ্য বা অন্যান্য যে কোনও কাজে ব্যবহার করা হয়, এই পদ্ধতিকেই হলাল বলা হয়।
ঝটকা কী? পশু হত্যার আর একটি পদ্ধতি হলো ঝটকা। ঝটকা হলো এক কোপে হত্যা করার পদ্ধতি। ঝটকা পদ্ধতিতে হত্যার সময়, ঘাড়ের পিছনের দিকে (dorsal neck) আঘাত করা হয় যাতে মস্তকের খুলিকে মেরুদণ্ডের সুষুম্নাকাণ্ড (spinal cord) থেকে নিমেষে পৃথক করা হয়। কেবল ঘাড়ের অংশ কাটাই (cervical dislocation)-ই নয়, বরং এক আঘাতে মাথাকে শরীর থেকে আলাদা করাই এর উদ্দেশ্য। তাই এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয় অপেক্ষাকৃত ভারী এবং ধারালো অস্ত্র।
এমএনএস-এর দাবি, ‘হালাল মাংস যেভাবে বাজার ছেয়ে ফেলেছে তাতে ঝটকা মাংসের ব্যবসায় বিরাট ক্ষতি হচ্ছে। আমরা নিজেদের টাকায় সন্ত্রাসবাদীদের পকেট ভরছি। যে করেই হোক মহারাষ্ট্রে হালাল পদ্ধতি বন্ধ করতেই হবে। তার জন্য দরকার আন্দোলন। আমরা চাই আরও মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন।’ প্রসঙ্গত, এর আগে এমএনএস মসজিদের বাইরে লাউডস্পিকার বিষয়ে আন্দোলন করার হুমকি দিয়েছিল।
মহারাষ্ট্রের আগে কর্ণাটকে জনজাগৃতি সমিতি, শ্রীরাম সেনা, এবং বজরং দল সম্মিলিত ভাবে হালালকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়। জানা যাচ্ছে, গত ১ এপ্রিল কর্ণাটকের ভদ্রাবতীতে বিভিন্ন হোটেলের কর্মচারীদের হালাল করা মাংস পরিবেশন করতে বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনার পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতারও করে। এবার মহারাষ্ট্র নবনির্মান সেনার এই আন্দোলন সমাজে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে সেটাই এখন দেখার।