বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই মুহূর্তে জর্জরিত ভারত। রোজই আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। গত ২৪ ঘন্টাতেও আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই মারণ রোগে, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন প্রায় কয়েক হাজার। এজন্য বারবার মোদী সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। সমালোচনা হয়েছে দেশ-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলিতেই। পরিস্থিতি কঠিন একাধিক দিক মাথায় রেখে তবেই নিতে হচ্ছে পদক্ষেপ। তর্ক বিতর্ক আলোচনা সমালোচনা তো চলবেই, কিন্তু এত মৃত্যু-মিছিল ভেঙে দেয় যে কোন দৃঢ় মানুষের মনও। তা তিনি প্রধানমন্ত্রী হন বা অন্য কেউ। এবার সেরকমই এক মানবিক দৃশ্য সামনে এলো আজকের কোভিড বৈঠকে। গত কয়েকদিনে কোভিদ নিয়ে বেশকিছু বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কখনো কখনো পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে খবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে। কখনো বা নিজেই বসেছেন তাদের সাথে।
আজ এমনই এক বৈঠকে বেশ কিছু চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণে উঠে আসে কোভিডের এই অসহায় মৃত্যু-মিছিলের কথা। আরে কথা বলতে বলতেই হঠাৎ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। কাশির কিছু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল এই বৈঠকে করোনা বিষয়ে আলোচনা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আক্রান্তদের সুস্থতা ও সাধারণ মানুষের সুরক্ষা বিষয়ে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েও এদিন আলোচনা করেন তিনি। এরপর এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে উঠে আসে অসহায় ভাবে মানুষের মৃত্যুর প্রসঙ্গ। কিছুদিন ধরেই গঙ্গায় ভাসছে লাশ, মৃতদেহ সৎকারের ভয় থেকে নদীর বেলাভূমিতে মৃতদেহ কবর দিয়ে চলে যাচ্ছে না অনেকেই।
এইসব দৃশ্য রীতিমত মর্মান্তিক যেকোনো মানুষের কাছেই। ব্যতিক্রম নন প্রধানমন্ত্রীও। এ দিন কোভিড প্রসঙ্গে তিনি বলছিলেন, “কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে, আমাদের একাধিক দিক একসঙ্গে মাথায় রেখে লড়তে হচ্ছে। সংক্রমণ আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি। রোগীদেরও অনেকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হচ্ছে।”
এ কথা বলতে বলতেই হঠাৎ কান্নায় গলা বুজে আসে তার। কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে তিনি জানান, “করোনা আমাদের অনেকের জীবন থেকে প্রিয় মানুষদের কেড়ে নিয়েছে।” বলতে বলতেই ফের আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। অবশেষে তিনি যোগ করেন, “আমি তাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাতে চাই। আর যারা আত্মীয় হারা হলেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা।”
গত কয়েক দিন ধরে যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে মোদী সরকারের। রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না দেওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত মুখ্যমন্ত্রীরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীও মানুষ, এই মৃত্যু-মিছিল তাকেও ব্যথিত করে। আর সেই দৃশ্যই আরেকবার সামনে এলো এই বৈঠকে।