বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আগামী মাসের ১ তারিখ থেকে ৬০ বছর অথবা তাঁর বেশি বয়সী মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হবে গোটা দেশজুড়ে। এছাড়াও ৪৫ বছর পর্যন্ত কোনও রোগীর মধ্যে কোমর্বিডিটি পাওয়া গেলে, তাঁকেও ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আর এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে ভ্যাকসিন কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করার আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সামনেই রাজ্যে ভোট। প্রচুর মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য একত্রিত হবেন। আর তাঁর জন্য বহু মানুষের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও আছে। সেই কারণে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে চায়। এই ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়, কীভাবে কেনা যাবে সেটা যেন রাজ্য সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জানানো হয়। রাজ্য সরকার সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে চায়।
বলে রাখি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন এর আগেও দেশবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আরেকদিকে, এবারের বাজেটে রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও গোটা দেশজুড়ে ধাপে ধাপে টিকাকরণ অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রথমে কোভিড যোদ্ধা, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এবার ৬০ বছর অথবা তাঁর থেকে বেশি বয়সী মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তবে কেউ যদি জরুরী ভিত্তিতে ভ্যাকসিন নিতে চায়, তাঁর জন্য বেসরকারি হাসপাতাল গুলো রয়েছে। সেখান থেকে নির্ধারিত দাম দিয়ে ভ্যাকসিন নিতে হবে।
তবে কেন্দ্রির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণার পরেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আর এই নিয়ে বিজেপি সমেত সমস্ত বিরোধী দলগুলো কটাক্ষও করেছিল। বিজেপির তরফ থেকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল যে, কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন নিয়ে ‘টিকাশ্রী” প্রকল্প চালাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ভ্যাকসিন নিয়েও দুর্নীতি সামনে আসবে।
তবে, ওয়াকিবহাল মহলের মতে মুখ্যমন্ত্রীর ভ্যাকসিন কেনা এবং রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। কারণ কেন্দ্র যখন বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিচ্ছেই, সেক্ষেত্রে রাজ্যের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণা করে সম্পূর্ণ বেমানান। এছাড়াও কেন্দ্র কোনও রাজ্যকেই এখনও সেরাম ইনস্টিটিউট আর ভারত বায়োটেক থেকে ভ্যাকসিন কেনার ছাড়পত্র দেয়নি। আর তাঁর প্রধান কারণ হল কেন্দ্র চায়না এই ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র আর রাজ্য রাজ্যের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হোক। তাই ধাপে ধাপে টিকাকরণ প্রক্রিয়াতেই হাঁটছে কেন্দ্র।