প্রথমে সম্মতি জানিয়েও SCO সম্মেলনে আচমকাই মত পরিবর্তন মোদীর, চিনের সাথে ফের বাড়বে দূরত্ব?

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আগামী ৩-৪ জুলাই আস্তানায় অনুষ্ঠিত হতে চলা সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সংসদের প্রথম অধিবেশনে যোগদান এই শীর্ষ সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকার একটি বড় কারণ হিসেবে উঠে এলেও অনেকেই মনে করছেন আসল কারণ কিন্তু চিনের (China) সঙ্গে উত্তেজনা।

বিষয়টির সাথে জ্ঞাত ব্যক্তিরা বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী আগেই নিশ্চিত করেছিলেন যে তিনি আস্তানা SCO সম্মেলনে যোগ দেবেন। তবে, এখন তিনি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠাতে পারেন। মূলত, রাশিয়া, চিন ও ইরানের নেতাদের পাশাপাশি আয়োজক কাজাখাস্তান এবং মধ্য এশিয়ার অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করার আশা নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মত হয়েছিলেন মোদী।

   

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারত ২০২৩ সালে SCO-র সভাপতিত্ব গ্রহণ করেছিল। কিন্তু, তখন এই শীর্ষ সম্মেলনটি ভার্চুয়াল মোডে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মোদী সমরকন্দে ২০২২ সালের SCO শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে কোনও বৈঠক করেননি। এদিকে, জিনপিং এবং মোদী পরে বালি G20 সম্মেলনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। তারপরে ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে একটি ছোট বৈঠক সম্পন্ন হয়।

Modi suddenly changed his mind at the SCO summit despite initially agreeing.

সীমান্তে উত্তেজনা শেষ হচ্ছে না: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সীমান্তে চলমান উত্তেজনার আবহে চিনের সাথে সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হচ্ছে। এদিকে, ধরমশালায় তিব্বতের ধর্মীয় গুরু দালাই লামার সাথে আমেরিকান প্রতিনিধিদলের বৈঠক এবং সরাসরি চিনে উড়ান পুনরায় চালু করতে রাজি না হওয়ার সিদ্ধান্ত স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, এই সম্পর্কের মধ্যে এখনও হিমশীতল ভাব রয়েছে। যদিও, এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয় যে চিনের সাথে ভারতের বাণিজ্য বাড়ছে এবং ভারতীয় শিল্পও চিনা পেশাদারদের জন্য ভিসা শিথিল করার দাবি করছে। উল্লেখ্য যে, ভারত বেইজিং এবং চিনের অন্যান্য বাণিজ্যিক দূতাবাস থেকে ইস্যুকৃত ভিসার সংখ্যার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

আরও পড়ুন: T2O বিশ্বকাপে চরম দুঃসংবাদ! কাছের মানুষের মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকে পাথর ইরফান পাঠান

সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বিলম্ব: এই বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চিন এখনও লাদাখের বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাশ পয়েন্টে গালওয়ান ঘটনার পূর্বের পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করতে রাজি হয়নি। যার কারণে সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে না। ভারত ও চিন ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিরোধের সমাধানের জন্য উচ্চ-স্তরের সামরিক আলোচনার একটি নতুন রাউন্ড করেছে। উভয় পক্ষই “শান্তি ও স্থিতিশীলতা” বজায় রাখতে সম্মত হলেও কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন: বিনিয়োগ মাত্র ৮০০ টাকা! টাটা গ্রুপের হাত ধরে লাখপতি হওয়ার দারুণ সুযোগ, করবেন না মিস

SCO সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা হবে: জানিয়ে রাখি যে, ওই বৈঠকে ভারতীয় পক্ষ ডেপসাং এবং ডেমচোকের অমীমাংসিত সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য জোরালোভাবে চাপ দিয়েছিল। কিন্তু আলোচনায় কোনও সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি হয়নি। বিদেশ মন্ত্রক তখন বলেছিল যে উভয়পক্ষ প্রাসঙ্গিক সামরিক ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার পথে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। এমতাবস্থায়, কাজাখাস্তানের সভাপতিত্বে SCO শীর্ষ সম্মেলনের লক্ষ্য হবে ইউরেশিয়ায় ক্রমবর্ধমান কট্টরপন্থী কার্যকলাপ এবং ISIS-এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের পটভূমিতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর