আগামী 24 এপ্রিল দিনটি বিজেপি দলের জন্য যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, তা বলা বাহুল্য। এই দিনই কাশ্মীর সফরের জন্য রওনা হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীরে 370 ধারা প্রত্যাহারের পর থেকে সেখানে আর পা রাখেননি মোদি। ফলে আইন প্রত্যাহারের পর এই প্রথম তাঁর কাশ্মীর শহর ঘিরে মানুষের মধ্যে উন্মাদনা রয়েছে চরমে।
জম্মুর সাম্বা নামক অঞ্চলে এক কর্মসূচির আয়োজন হতে চলেছে এবং পরবর্তীতে পঞ্চায়েত রাজ দিবস উপলক্ষ্যে সেখানে একটি শোভাযাত্রাতেও হাঁটবেন মোদি। এরপর জনগণের উদ্দেশ্যে বক্তৃতাও রাখবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, 2009 সালের 5 ই আগস্ট কেন্দ্র সরকারের দ্বারা কাশ্মীরে 370 ধারা বাতিল করা হয় এবং স্বভাবতই এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর দুটি ভিন্ন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে যায়।
কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর উভয় অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিক্ষোভ থেকে শুরু করে একাধিক ঝামেলার ঘটনা সামনে আসে। সেই সময় কেন্দ্র সরকার ঘোষণা করে যে, তারা ধীরে ধীরে জম্মু কাশ্মীরের বুকে গণতান্ত্রিক মর্যাদা ফিরিয়ে আনবে। কাশ্মীরের উন্নতি সাধন করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।কিন্তু তারপরেও থামেনা মানুষের ক্ষোভ আর তারই মাঝে সেই ধারা প্রত্যাহারের পর এই প্রথম কাশ্মীর সফরে যেতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি।
প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে প্রায় হাজার হাজার দলের কর্মী অংশ নেবেন বলে জানা যাচ্ছে। কর্মসূচি শেষে কাশ্মীরবাসীর উদ্দেশ্যে গণতন্ত্রের বার্তাও দেবেন মোদি।সামনেই কাশ্মীরের বুকে ভোট। ফলে সূত্রের খবর, এর আগে মোদির সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এখানে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনাতেও বসবেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে ভোটের পূর্বে এলাকার পরিস্থিতি বুঝে নেওয়াই যে দলের লক্ষ্য, তা বলাবাহুল্য।
এছাড়াও আগামী 24 এপ্রিল পঞ্চায়েত রাজ দিবস উপলক্ষ্যে মোদির যাত্রা। সূত্রের খবর, সাম্বার পল্লী গ্রামকে বর্তমানে কার্বনমুক্ত সোলার গ্রাম হিসেবে কেন্দ্রের ঘোষণার পর সেই এলাকায় পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন মোদি। কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, পল্লীগ্রামে বর্তমানে 500 kv এর সোলার প্লান্ট নির্মাণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রায় 350 পরিবার বর্তমানে বিদ্যুৎ পেতে চলেছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও বিস্তার লাভ করবে বলে জানায় সরকার। ফলে এই সকল ব্যবস্থা পরিদর্শন এবং এলাকায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার উন্নতি সকলের সামনে তুলে ধরাই প্রধান লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর।
এছাড়াও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। সকল উদ্বাস্তু পণ্ডিতদের কিভাবে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই বিষয়টিকেই আপাতত পাখির চোখ করেছেন মোদি।
সূত্রের খবর, কাশ্মীরের বুকে মোদির পা রাখার আগে সেখানে একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। এদিন কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ফলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই ঘটনায় এক রেল পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয় এবং দুই ব্যক্তি জখম হয়েছে বলেও জানা গেছে। এছাড়াও এর পূর্বে এহেন একাধিক ঘটনায় বহু মানুষের মারা যাওয়ার খবর সামনে এসেছে। ফলে এই পরিস্থিতিতে মোদির কাশ্মীর শহর যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে, সে বিষয়ে মত বিশেষজ্ঞদের।