বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের মুকুটে ফের নতুন পালক জুড়ল! এবার সমস্ত রেকর্ড কার্যত উড়িয়ে দিয়েই ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বিপুল রপ্তানি করল ভারত। যা নিঃসন্দেহে ভারতের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত অর্থবর্ষে প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে ভারত। অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় গড়ে ৩৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে দেশ থেকে। যদি, প্রতি ঘন্টার নিরিখে এই হিসেব দেখানো হয় তাহলেও তা চমকে দেবে সবাইকে। তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ঘণ্টায় ৪৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে ভারত।
শুধু তাই নয়, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের রপ্তানির মোট পরিমাণ ছিল ২৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেখানে ২০২১-২২-এর অর্থবর্ষে ভারতের রপ্তানি একধাক্কায় ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর তাতেই তৈরি হয়েছে নতুন রেকর্ড।
যদিও, এই বিশাল লক্ষ্য পূরণে সফল হতে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করেছে কেন্দ্র। মোট ২০০ টি দেশের জন্য রপ্তানির লক্ষ্য স্থির করে এগিয়েছিল ভারত। পাশাপাশি, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের সব বিভাগ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করেছে। রপ্তানিকারকদের সমস্যা দ্রুত সমাধানের ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে।
শুধু তাই নয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং স্টার্টআপগুলি যাতে সরাসরি রপ্তানি করতে পারে তার জন্যও বিশেষ পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এছাড়াও, এমনসব পণ্যের বাজারগুলিতে ভারতের নজর ছিল যেখানে অন্যান্য দেশ নিজেদের প্রভাব হারিয়েছে, তাই খুব সহজেই সেক্ষেত্রে রপ্তানির পথ সুগম হয়েছে।
জানা গিয়েছে যে, জৈব এবং অজৈব রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, পেট্রোলিয়াম পণ্য, রত্ন এবং গহনার মত পণ্যগুলি রফতানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। পাশাপাশি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, নেদারল্যান্ডস, আমেরিকা, চিন ও বাংলাদেশ রফতানির নিরিখে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এমনিতেই বিশ্বজুড়ে চলা করোনা মহামারীর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছিল দেশজুড়ে। ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে পিপিই কিট থেকে শুরু করে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী আমদানি করতে হয়েছিল ভারতে। যদিও, সেই সময়ে “সাপ্লাই চেন” সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ায় বহু প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় দেশকে।
পাশাপাশি, গালওয়ান সংঘর্ষের পর চিনা পণ্যের উপর নির্ভরতা কমাতে চেয়েছিল সরকার। একটা সময়ে চিনা দ্রব্য বয়কেটর ডাকও ওঠে। এমতাবস্থায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত সুযোগ খোঁজার আবেদন করেছিলেন। পাশাপাশি, দেন “আত্মনির্ভরতার” ডাকও। সেই আবেদনেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
আর তার ফলেই চলতি অর্থবর্ষে ভারত বিপুল পরিমাণ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। এই প্রসঙ্গে অবশ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, করোনা নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বিশ্বের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। যার জেরে ভারতও রপ্তানিতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।