ঘাতক ড্রোন সহ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন! ভারত বিরোধী মুইজ্জু তুরস্কের সাথে করছেন ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মোহাম্মদ মুইজ্জু (Mohamed Muizzu) মলদ্বীপের (Maldives) প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তুরস্ক (Turkey) ও ওই দ্বীপরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট প্রথমে তুরস্ক সফর করেন এবং প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের (Recep Tayyip Erdoğan) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতের পর তুরস্ক তার বিপজ্জনক TB-2 ড্রোন মলদ্বীপকে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, মলদ্বীপ ভারতের লাক্ষাদ্বীপের কাছে থাকা তার দ্বীপে এটি মোতায়েন করেছে। এর মাধ্যমে ভারত সংলগ্ন সামুদ্রিক এলাকায় নজরদারি শুরু করা হয়েছে। এরপর তুরস্ক তাদের যুদ্ধজাহাজ পাঠায় মলদ্বীপে। বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে গ্রিসের মিডিয়া জানিয়েছে, মলদ্বীপের সহায়তায় ভারত মহাসাগরে তার সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে চায় তুরস্ক। বর্তমানে, তুরস্কের বাহিনী ইতিমধ্যে সোমালিয়ায় উপস্থিত রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ভারত মহাসাগরের সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় হল ভারত। তবে, এবার তুরস্ক, পাকিস্তান ও চিন এই সামুদ্রিক এলাকায় তাদের প্রভাব বাড়াতে চায়। গ্রিসের নিউজ ওয়েবসাইট ডাইরেক্টোস তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, মলদ্বীপ প্রাক্তন সেনাপ্রধান আবদুল রহিম আবদুল লতিফকে তুরস্কে তাদের নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছে। এদিকে, প্রাক্তন সেনাপ্রধানকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করার বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রাক্তন সেনাপ্রধানের মোতায়েন দুই দেশের মধ্যে সামরিক কূটনীতি আরও শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত করছে।

   

কেন মলদ্বীপের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে তুরস্ক: ডাইরেক্টাস বিশ্লেষকদের উদ্ধৃত করে বলেছে যে, এই যোগাযোগ স্থাপন সেই চিহ্নকে প্রদর্শন করে যে মলদ্বীপ মধ্য ভারত মহাসাগরে দখল শক্তিশালী করতে তুরস্কের প্রবেশদ্বার হতে প্রস্তুত। পাশাপাশি, ইস্তাম্বুল সেন্টার ফর ইন্ডিয়ান ওশান স্টাডিজের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক অংশে তার কৌশলগত দখলকে শক্তিশালী করার জন্য এটি তুরস্কের একটি চতুর ভূ-রাজনৈতিক পদক্ষেপ।” উল্লেখ্য যে, মলদ্বীপের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এমন যে ভারত মহাসাগরের এই গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক এলাকায় তুরস্ক নৌশক্তি প্রদর্শন করতে সক্ষম হবে।

Mohamed Muizzu is making terrible plans with Turkey.

তুরস্ক ২০১৭ সালে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে তার বৃহত্তম বিদেশি সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে। এটি আফ্রিকা সংলগ্ন ভারত মহাসাগরের এই এলাকায় তাদের প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করেছে। এখন তারা মলদ্বীপের সাথে অংশীদারিত্ব করে মূখ্য ভূমিকা নিতে চায়। এর মাধ্যমে এটি মলদ্বীপের মধ্য দিয়ে সমগ্র অঞ্চলের সামুদ্রিক পরিবহণ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে। বিশ্বের অধিকাংশ বাণিজ্য এই সমগ্র অঞ্চলে সঞ্চালিত হয়। বলা হচ্ছে যে, তুরস্কের আধিকারিকরা সমুদ্র বন্দর এবং বিমানঘাঁটিতে প্রবেশাধিকার পেতে মলদ্বীপ সরকারের সাথে কথা বলেছেন, যাতে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এবং বিমানগুলিকে জ্বালানি দেওয়া যায়।

আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান অতীত! এবার ভারতের আরেক প্রতিবেশীকে চরম ঠকাল চিন, রেগে লাল বন্ধু

মলদ্বীপে সেনাবাহিনী, তুরস্কের জন্য বড় জয় হবে: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর ফলে সোমালিয়া থেকে মলদ্বীপে তুরস্ক তার নাগাল প্রসারিত করতে সক্ষম হবে। শুধু তাই নয়, মলদ্বীপকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং দ্বিপাক্ষিক সামরিক মহড়া চালানোর কথাও বলছে তুরস্ক। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এর বাইরে তুরস্কের সেনা ও গুপ্তচরবৃত্তির সরঞ্জাম মোতায়েনের বিষয়েও আলোচনা চলছে। তুরস্কের সামরিক বিষয়ক বিশ্লেষক সেলিম আকনুল বলেন, “মলদ্বীপে সামরিক উপস্থিতি সীমিত হলেও তা হবে তুরস্কের জন্য একটি বড় কৌশলগত সাফল্য। এর সাহায্যে তুরস্ক বিশ্বের এই মেরিটাইম চোকপয়েন্টে সামুদ্রিক পরিবহণের ওপর নজর রাখতে এবং আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক সক্ষমতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হবে।”

আরও পড়ুন: ঋষভ পন্থের ওপর বড় অ্যাকশন! এক ম্যাচের জন্য হলেন সাসপেন্ড, জরিমানার সম্মুখীন পুরো দল

তুরস্ক এবং মালদ্বীপের মধ্যে সামরিক বন্ধুত্ব ভারতের জন্য হুমকি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, তুরস্ক এবং মলদ্বীপের চিনপন্থী মুইজ্জু সরকারের মধ্যে বন্ধুত্ব ভারতের জন্য একটি বড় হুমকি। বিশ্লেষকরা বলছেন, তুরস্কের এই সেনা মোতায়েনকে ভারত হুমকি হিসেবে নেবে। ভারত মহাসাগরে তুরস্ক তার দখল শক্ত করার চেষ্টা করলে ভারতকে তার কৌশল পরিবর্তন করতে হতে পারে। ভারতের বিরোধিতা সত্বেও, মলদ্বীপ সরকার TB-2 ড্রোন কিনেছে যা ইউক্রেনে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এদিকে, তুরস্ক ইতিমধ্যেই পাকিস্তানে ঘাতক ড্রোন ও যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ করছে। এখন ভারতের উত্তেজনা বাড়াতে পারে মলদ্বীপ। একই সময়ে, চিন মলদ্বীপে একটি গুপ্তচরবৃত্তি কেন্দ্র এবং পরে একটি নৌ বন্দর নির্মাণের প্রস্তুতিও নিয়েছে। অন্যদিকে, মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের দাবি করছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর