বাংলাহান্ট ডেস্ক: মন ভারাক্রান্ত করে দেওয়ার মতো খবর সঙ্গীত জগৎ থেকে। প্রয়াত ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র (Mohiner Ghoraguli) শেষ স্তম্ভ তাপস দাস বাপি (Tapas Das Bapi)। মারণ ব্যাধি ক্যানসারের বিরুদ্ধে জীবন যুদ্ধে হার স্বীকার করতে বাধ্য হলেন তিনি। সুর, গান, ভক্তদের ভালবাসা সব ফেলে পরলোকের উদ্দেশে পাড়ি জমালেন সঙ্গীতশিল্পী। তাঁর প্রয়াণে শোকের ভারী ছায়া নেমে এসেছে বাংলার সাংষ্কৃতিক জগতের উপরে।
‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র অন্যতম সহ প্রতিষ্ঠাতা তাপস দাস বাপি। ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পী। ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না। সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটা জানতে পেরেই সকলের কাছে সাধ্যমতো সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী রূপম ইসলাম। শ্রোতাদের তরফেও চিকিৎসার জন্য অর্থ তোলা হচ্ছিল।
খবর ছড়িয়ে পড়তে অবশ্য তাপস দাস বাপির চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় রাজ্য সরকার। এসএসকেএম এ শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা। কিন্তু শেষরক্ষা করা গেল না। রবিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পী। ফুসফুসের ক্যানসারের তৃতীয় স্টেজে ছিলেন তিনি।
তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘তাপসতাপস দাসের (বাপিদা) মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম রক ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলির সদস্য। মারণরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। শিল্পীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের সরকার এসএসকেএম এ তাঁর চিকিৎসার পুরো খরচ বহন করেছিল। শিল্পীর স্ত্রী সুতপা, তাঁর শোকাহত পরিবার এবং ভক্তদের প্রতি আমার সমবেদনা’।
কোনো রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিতে রাজি ছিলেন না তাপস দাস বাপি। শেষমেষ চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন তাপস দাস বাপি। রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। শিল্পীর স্ত্রী জানিয়েছিলেন, চারটি কেমোথেরাপি নেওয়া হয়ে গিয়েছগিয়েছিল তাঁর। সম্পূর্ণ তরল খাবার খেয়ে থাকতে হত তাঁকে। রাইলস টিউব লাগিয়ে রাখতে হত সবসময়।
ওই অবস্থাতেও গান ছেড়ে যায়নি তাঁকে। রাইলস টিউব লাগিয়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে বেড়াতেন তিনি। শ্রোতারা মন প্রাণ দিয়ে প্রার্থনা করেছিলেন সঙ্গীতশিল্পীর সুস্থতার। কিন্তু সবার সব প্রার্থনা বিফলে দিয়ে সুরলোকে পাড়ি দিলেন তাপস দাস বাপি।