গরু পাচারের টাকা যেত নেপালে! অনুব্রতর পর উঠে এলো আরো এক প্রভাবশালী নেতার নাম

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কয়লা পাচার থেকে গরু পাচার মামলা, একের পর এক দুর্নীতিতে তদন্তের দায়ভার হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তাদের হাতে। সম্প্রতি, এ মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী অফিসাররা। এরপর থেকেই বিতর্ক যেন চরমে আর এবার অনুব্রত মণ্ডলের পর সিবিআইয়ের (CBI) হাতে উঠে এলো তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) দ্বিতীয় সারির এক প্রভাবশালী নেতার নাম। এমনকি, অতীতে সেই নেতা কংগ্রেস করার পাশাপাশি ফরওয়ার্ড ব্লক দলেও সামিল ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর থেকে সিবিআই তদন্তের জাল ক্রমশ গোটাতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অনুমান, গরু পাচার মূলত বাংলাদেশে করা হয়ে থাকতো। এক্ষেত্রে অবশ্য পাচার হওয়া টাকা একাধিক দেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলে অনুমান তাদের আর এবার এ প্রসঙ্গে উঠে এলো ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালের নাম।

সিবিআই সূত্রের খবর, গরু পাচার করে যে টাকা আদায় করা হয়, তার একটি বিশাল পরিমাণ অংশ গিয়েছে নেপালে। সেখানে একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সেই অর্থ। সূত্রের খবর, নেপালের ভরতপুরে চিতওয়ান মেডিকেল কলেজ তৈরিতে গরু পাচারের অর্থ বিনিয়োগ করা হয়। এই কাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিতীয় সারির একজন প্রভাবশালী নেতা জড়িত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গে ওই নেতার যাতায়াত এক প্রকার লেগে থাকত। ফলে উত্তরবঙ্গ হয়েই নেপালে সেই টাকা পৌঁছে যেতে হলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বেশ কয়েক মাস আগে গরু পাচার মামলায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। ইতিমধ্যেই তাকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। তাকে জেরার মাধ্যমে দ্বিতীয় সারির ওই নেতার নাম উঠে এসেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তদন্তকারী অফিসারদের মতে, অনুব্রত মণ্ডলের কাছে গরু পাচারের টাকা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ওই নেতার উপরে। একই সঙ্গে গরু এবং কয়লা পাচার দুর্নীতিও নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে বর্তমানে সিবিআই-এর হাতে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, গরু পাচারে ওই প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে জড়িত ছিল আব্দুল লতিফ এবং মাধব কৈবর্ত। উল্লেখ্য, শেষের জন কয়েক মাস পূর্বে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সিবিআইয়ের দাবি, গরু পাচারের টাকা অনুব্রত মণ্ডল, সায়গল হোসেন এবং ওই প্রভাবশালী নেতা ছাড়া কলকাতাতেও পৌঁছে যেত। ফলে এই মামলায় আরো কে কে জড়িত রয়েছে, তা জানতে বদ্ধপরিকর গোয়েন্দা অফিসাররা।

Untitled design 2022 08 10T160916.055

উল্লেখ্য, তদন্তের স্বার্থে ওই প্রভাবশালী নেতার নাম প্রসঙ্গে খোলসা করেনি সিবিআই। তবে জানা গিয়েছে, ওই নেতা অতীতে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে ফরওয়ার্ড ব্লকে সামিল হন তিনি। তবে এর পরেই ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই রাজ্যের শাসক দলে যোগদান করেন। এরপরেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে তাঁর। গরু পাচার মামলায় নাম জড়াতেই ইতিমধ্যে ওই নেতার বিষয়ে আরো একাধিক তথ্য জোগাড় করতে নড়েচড়ে বসেছে সিবিআই।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর