বাংলা হান্ট ডেস্ক: উত্তর সেন্ট্রাল রেলওয়ে (এনসিআর) জোনে আগামী দিনে, নন-সেফটি ক্যাটাগরি সম্পর্কিত দশ হাজারেরও বেশি পদ স্যারেন্ডার করা হতে পারে। ইতিমধ্যেই প্রয়াগরাজ, ঝাঁসি এবং আগ্রা বিভাগে স্যারেন্ডার করা পদগুলির একটি তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া সদর দফতর স্তরে শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে যে, ২০২২-এর ৩১ মে’র মধ্যে স্যারেন্ডার করা পদের তালিকা রেলওয়ে বোর্ডে পাঠানো হবে।
মূলত, গত ২০ মে, রেলওয়ে বোর্ড এনসিআর সহ সমস্ত জোনাল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজারদের কাছে একটি চিঠি জারি করেছিল। ওই চিঠির মাধ্যমে নন-সেফটি ক্যাটাগরির ৫০ শতাংশ পদ অবিলম্বে বাতিল করতে বলা হয়েছে। রেলওয়ে বোর্ডের ডিরেক্টর এমপিপি রেণু যাদবের জারি করা চিঠিতে বলা হয়েছে যে, ৩১ মে’র মধ্যে সমস্ত জোনাল রেলওয়ে এবং রেল উৎপাদন ইউনিটগুলিকে ৫০ শতাংশ পদ বাদ দিয়ে বোর্ডে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
এই প্রসঙ্গে নর্থ সেন্ট্রাল রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের জোনাল জেনারেল সেক্রেটারি আর ডি যাদব বলেছেন যে, এনসিআর-এ ২১,৫০০ টি পোস্ট নন-সেফটি বিভাগের। এমতাবস্থায়, ৫০ শতাংশ পদ স্যারেন্ডার করলে এই সংখ্যা দাঁড়াবে দশ হাজারের ওপরে। তিনি আরও বলেন, যদিও সরকার দাবি করছে যে রেলওয়ে বেসরকারিকরণ হবে না, কিন্তু এই নীতিগুলি থেকে স্পষ্ট যে বেসরকারিকরণের দিকেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, অনেক পরিষেবা আউটসোর্স করার নির্দেশও দিয়েছে বোর্ড।
রেলের অনেক পদ অবলুপ্ত হয়ে যাবে:
টাইপিস্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট কুক, বিল পোর্টার, স্যানিটারি হেলপার, গার্ডেনার, ড্যাফটারি, কার্পেন্টার, পেইন্টার, গার্ডনার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেলসম্যান, ক্যাটারিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, ওয়ালম্যান সহ একাধিক পদ অবলুপ্ত করে এখন এসব পদে কর্মরত কর্মীদের অন্য বিভাগে পাঠানোর কথাও রয়েছে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে, রেলওয়ে এই পদগুলিতে আর নিয়োগ করবে না। বোর্ড নির্দেশ দিয়েছে যে, জোনাল রেলওয়েকেও তাদের স্তরে এই জাতীয় পদগুলি চিহ্নিত করতে হবে, যেখানে কর্মীদের পুরোপুরি ব্যবহার করা হচ্ছে না। এই বিভাগে টাইম কিপার, স্টাফ, পরিসংখ্যান স্টাফ, টিকিট স্টাফ, সিকিউরিটি স্টাফ, স্টোর খালাসি এবং অন্যান্য পদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এনসিআর গঠনের সময়ে ৮০ হাজার পদ ছিল, এখন আছে ৬২ হাজার:
এনসিআর জোনটি ২০০৩ এর ১ এপ্রিল গঠিত হয়েছিল। তখন এখানে মোট পদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০ হাজার। গত ১৯ বছরে এখানে পদসংখ্যা হ্রাস পেয়ে নেমে এসেছে মাত্র ৬২ হাজারে। এমতাবস্থায়, এখন ফের নন-সেফটি ক্যাটাগরির ৫০ শতাংশ পদ স্যারেন্ডারের ফরমান জারি করেছে বোর্ড। আর এর ফলে এখানে দশ হাজারেরও বেশি পদ কমে যাবে।
যদিও এই প্রসঙ্গে, নর্থ সেন্টাল রেলওয়ের মেন্স ইউনিয়নের বিভাগীয় প্রধান ডিএস যাদব জানিয়েছেন যে, কর্মচারীর সংখ্যা কমিয়ে বেসরকারিকরণের চেষ্টা চলছে। এই কারণে, রেলওয়ে বোর্ড নন-সেফটি ক্যাটাগরির ৫০ শতাংশ পদ স্যারেন্ডার করতে বলেছে। কিন্তু, প্রধান ইউনিয়ন এটি হতে দেবে না। এর তীব্র বিরোধিতা হবে।
এছাড়াও, নর্থ সেন্ট্রাল রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের জোনাল জেনারেল সেক্রেটারি আরপি সিং জানিয়েছেন, কর্মচারী ইউনিয়ন প্রথম থেকেই বলে আসছে যে কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনো মূল্যে রেলকে বেসরকারীকরণ করতে আগ্রহী। পদগুলো স্যারেন্ডার করতে দেওয়া হবে না। এর প্রতিবাদে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে আন্দোলনের কৌশল প্রণয়ন করা হবে।
এদিকে, এনসিআরের সিপিআরও জানিয়েছেন যে, “রেলওয়ে বোর্ড থেকে এ পর্যন্ত বেশ কিছু চিঠি পাওয়া গেছে। তাদের সকলের উপর একটি বিস্তৃত আলোচনা চলছে। গত কয়েক বছরে এমন অনেক পদ আছে, যেগুলো কোনো কাজে আসছে না। এমনকি গত কয়েক বছরে নতুন কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায় এই সব পদের কর্মচারীরা ঠিক কোন জায়গায় নিযুক্ত হবেন তা নিয়েও আলোচনা চলছে। এটি একটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক প্রক্রিয়া।”