বাংলা হান্ট ডেস্কঃ “মানুষের যখন খারাপ কিছু হয় তখন বিচারব্যবস্থা তাঁদের পাশে থাকে।” ২১ সালে বিচারব্যবস্থা নিয়ে একথা বলেছিলেন বিচারপতি এন ভি রামানা। সত্যিই তাই, সেই ন্যায় বিচারের আসায় পথ চেয়ে রয়েছেন দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ। বিচারের বাণী ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে ভারতীয় নিম্ন আদালতগুলিতে (Indian Courts)। তবে সম্প্রতি যে সংখ্যাটা সামনে এসেছে তা দেখে সকলের চক্ষু চড়কগাছ!
গত ২০ জানুয়ারি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিড (National Judicial Data Grid)। আর সেই রিপোর্ট সামনে আসতেই ভীমরি খাওয়ার উপক্রম। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিড এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের নিম্ন আদালত গুলিতে নিষ্পত্তি হয়নি এমন মামলার সংখ্যা প্রায় চার কোটিরও বেশি। অন্যদিকে শুধুমাত্র পরামর্শের অভাবে পড়ে রয়েছে আরও প্রায় ৬০ লক্ষের অধিক মামলা। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অজস্র সংখ্যক মামলা জমে থাকার পিছনে অন্যতম প্রধান কারণ, বিচারকের অভাব ও পরিকাঠামোগত সমস্যা।
অন্যদিকে, এই মামলা গুলির মধ্যে মাত্র একদিনেই মিটে যাবে এরূপ মামলার সংখ্যাও প্রচুর। তবে সঠিক পরামর্শের অভাবে সেই মামলাগুলি খাতা বন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্যগুলি সদিচ্ছা দেখলেই সেইসব মামলাগুলির নিস্পত্তি হতে পারে এক দিনেই। এই বিষয়ে শীর্ষ অবস্থান করছে যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিডের রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে প্রায় ২৪ লক্ষ মামলা এই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যার মধ্যে ২০.২ লক্ষ ফৌজদারি মামলা অর্থাৎ ক্রিমিনাল কেস। এবং ৪.৫ লক্ষ সিভিল কেস।
এরপরেই রয়েছে বিহার। সেখানে এই রূপ মামলার সংখ্যাটা প্রায় ৯ লক্ষ। পিছিয়ে নেই মহারাষ্ট্রও। সেখানে সংখ্যাটা আট লক্ষের কিছু অধিক। অন্যদিকে, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ২.৩ লক্ষ ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে নিম্ন আদালতে। তবে তাৎপর্যমূলকভাবে , এই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রথম সারিতে থাকা এই রাজ্যগুলির তালিকায় নাম নেই বাংলার। এর কারণ হিসেবে বলা যায় গত কয়েক বছর ধরে পূর্বের তুলনায় রাজ্য সরকার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য বাংলায় বাড়ানো হয়েছে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের সংখ্যাও।
অন্যদিকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রকের তথ্যে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক দশকের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ২০১৭-১৮ সাল থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত ভারতে প্রায় এক কোটি মানুষ দ্রুততার সঙ্গে বিচার পেয়েছেন। অর্থাৎ কেন্দ্রের দাবি, আগের তুলনায় অনেক বেশি জোর দিয়ে সারা দেশে মামলা গুলির দ্রুত নিস্পত্তি করা হচ্ছে।