৪ দিনে উদ্ধার ৪০০ টিরও বেশি বোমা, কার্যতই জতুগৃহ বীরভূম

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কার্যতই জতুগৃহে পরিণত হয়েছে বীরভূম। জেলায় পুলিশি অভিযান চালিয়ে চার দিনের মধ্যে উদ্ধার ৪০০ এর ও বেশি তাজা বোমা৷ সেই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে বারুদ এবং বোমা তৈরির সামগ্রিও। মাড়গ্রাম, লাভপুর, দুবরাজপুর, মল্লারপুর, এই সমস্ত এলাকাগুলি থেকে মিলেছে অগণিত বোমা। যার ফলে কার্যতই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়েও। স্বভাবতই এই বোমা ইস্যুতে বিস্ফোরক বিরোধী শিবির। বীরভূমের বাড়ি বাড়ি বোমা মজুত করা হচ্ছে, আর তা হচ্ছে শাসকদলের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে, এমনটাই অভিযোগ তাদের। যদিও তৃণমূলের পাল্টা জবাব কড়া হাতেই সবদিক সামলে পদক্ষেপ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।

গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার, রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডের আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে রামপুরহাট গিয়ে পুলিশকে গোটা রাজ্যে বেআইনি ভাবে মজুত আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা উদ্ধারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকেই চূড়ান্ত তৎপরতায় মাঠে নেমেছে পুলিশ। অবশ্য হাতেনাতে ফলও মিলেছে তাতে। গত ৪ দিনেই শুধু বীরভূম থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৪০০ এর বেশি বোমা, বিপুল পরিমাণ বারুদ এবং বোমা বানানোর সামগ্রি।

শুক্রবার বীরভূমের মাড়গ্রামে উদ্ধার করা হয় ৬০ টি তাজা বোমা। এখানেই শেষ নয়, পরদিন শনিবারও একই এলাকা থেকেই উদ্ধার করা হয় আরও ১০০ টি বোমা। রবিবার দুটি ড্রামে ভর্তি ৪০ টি বোমা উদ্ধার হয় মল্লারপুরে। একই দিনে দুবরাজপুরে উদ্ধার করা হয় ৩০ টি বোমা এবং ৩ কেজি বারুদ।

সোমবারও অভিযান চালায় পুলিশ। সেদিনও দুবরাজপুর এবং লাভ পুর এলাকায় মোট ১৪০ টি বোমা উদ্ধার করা হয়। দুবরাজপুর ব্লকের সাহাপুর প্রাথমিক কেন্দ্রের উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের পরিত্যক্ত শৌচালয়ের চেম্বার থেকে উদ্ধার হয় ৩০ টির মতন বোমা। অন্যদিকে লাভপুরের সাও নদীর পাড়ের একটি ঝোপের আড়াল থেকে ২ ড্রাম ভর্তি মোট ১১০ টি বোমা উদ্ধার করে লাভপুর থানার পুলিশ। ঝামেলা এড়াতে পুলিশি পাহারা মোতায়েন করা হয়েছে সবগুলি এলাকাতেই।

bomb 3

স্বভাবতই এই ঘটনায় সোচ্চার বিরোধীরা। যে পরিমাণ বোমা মজুত আছে তাতে গোটা দেশ উড়ে যাবে এমনটাই দাবি তাদের। বীরভূমের বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহার কথায়, ‘বাড়িতে বাড়িতে বোমা মজুত হচ্ছে। বারুদের স্তুপের উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে বীরভূম।’ জেলার কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট চঞ্চল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘বীরভূমে যে পরিমাণ বোমা মজুত আছে, তাতে গোটা দেশই উড়ে যেতে পারে।’ যদিও এই সবের পালটা দিতে সচেষ্ট শাসক দল। বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাসকদলের নেতাদের দাবি, ‘শক্ত হাতেই সব সামলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর নির্দেশেই কাজ করছে প্রশাসন।’ তবে এই সমস্ত মিলিয়ে যে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, তা বলাই বাহুল্য।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর