বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতিটি সফলতার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে অসম্ভব এক লড়াইর গল্প। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে সাফল্যের মুকুট পরেছেন এক লড়াকু ছাত্র! সোমনাথ মালি মহারাষ্ট্রের প্রথম ছাত্র যিনি ISRO-তে সিনিয়র বিজ্ঞানী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। গত বছরের ২ জুন এই পদে তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরই সাড়া পড়ে যায় দেশজুড়ে। স্বাভাবিকভাবেই, ছেলের এই বড় সাফল্যে অত্যন্ত খুশি তাঁর বাবা-মাও!
তবে, সোমনাথের এই সাফল্যের পথ কিন্তু মোটেও সহজ ছিলনা। শ্রমিকের কাজ করে ছেলের পড়াশোনার খরচ সামলেছেন তাঁর বাবা-মা। স্বাভাবিকভাবেই দারিদ্রের ভ্রূকুটিকে খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করেছেন সোমনাথ। তবে, কোনো বাধাই তাঁকে আটকে রাখতে পারেনি। বরং তাঁর বাবা-মায়ের ওপর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা ও কঠোর পরিশ্রমের সাথে পড়াশোনা চালিয়ে যান তিনি।
সোমনাথ মালি মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলার পান্ধরপুর তহসিলে অবস্থিত সারকোলি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রথমে জেলা পরিষদ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণ করেন এবং তারপর তাঁর নিজের গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষা দেন।
কলেজের পড়াশোনার জন্য তিনি পন্ধরপুরের কেবিপি কলেজে ভর্তি হন। তারপরেই তিনি একে একে কঠিন পরীক্ষাগুলিতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। সোমনাথ GATE পরীক্ষায় ৯১৬ তম স্থান অর্জন করেছিলেন। তারপরে তিনি IIT দিল্লিতে মেকানিক্যাল ডিজাইনার কোর্সে নির্বাচিত হন।
এই প্রসঙ্গে সোমনাথ জানিয়েছেন যে, ২০১৬ সালে, তিনি ISRO-তে আবেদন করেছিলেন, কিন্তু সেই সময়ে তিনি ISRO-এর লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। তারপরে ২০১৯ সালে, তিনি আবার তাঁর এমটেক ডিগ্রির ভিত্তিতে ISRO-তে আবেদন করেছিলেন।
তিনি দিল্লি IIT থেকে মেকানিক্যাল ডিজাইনিং কোর্স করেছেন। পাশাপাশি, IIT-তে পড়াকালীন তিনি প্লেনের ইঞ্জিনের নকশা নিয়ে কাজ করারও সুযোগ পান। তাঁর ভাল কাজের কারণে, ২ জুন, তিনি ISRO-তে একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী হিসাবে নির্বাচিত হন। কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের ফলে সোমনাথ যেভাবে সফল হয়েছেন তা নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা জোগাবে দেশের পড়ুয়াদের।