২৪ বছর আগে কার্গিল যুদ্ধে শহীদ হওয়া ছেলেকে সম্পত্তির ভাগ দিলেন মা, তাঁর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ঘরও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আজ সারা দেশে পালিত হচ্ছে কার্গিল বিজয় দিবস (Kargil Vijay Diwas)। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ভারতীয় সেনার (Indian Army) এমন একজন শহীদ সৈনিকের মায়ের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি তাঁর বীর সন্তানকে এখনও “বাঁচিয়ে” রেখেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি ছেলেকে সম্পত্তিতে ভাগ দেওয়ার পাশাপাশি বাড়িতে একটি বিশেষ কক্ষও নির্মাণ করেছেন। পাঞ্জাবের ফাজিলকায় এইভাবে শহীদ ছেলের উপস্থিতি আজও অনুভব করছেন তাঁর মা।

জানা গিয়েছে, ছেলের জন্য তৈরি ঘরে ২৪ ঘণ্টা আলো ও পাখা চলে। ছেলের বিশ্রামের জন্য একটি বিছানাও রাখা হয়েছে। রয়েছে পানীয় জলও। সেই সঙ্গে ছেলের ছবি, ইউনিফর্ম ও তেরঙার পাশাপাশি শত্রুদের সেই গুলিও রয়েছে যা ছেলের বুক বিদ্ধ করেছিল। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ২৪ বছর আগে শহীদ হওয়া ওই সৈনিকের মা বিশ্বাস করেন যে, তাঁর ছেলে বাড়িতে আসেন এবং এখনও দেশ রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯ বছর বয়সে শহীদ হন: বলবিন্দর সিংয়ের মা বচ্চন কৌরের মতে, কার্গিল যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁর ছেলে মাত্র ১৯ বছর বয়সে শহীদ হয়েছিলেন। মূলত, ৫ জানুয়ারি যখন ভারতে শত্রুরা অনুপ্রবেশ করছিল, সেই সময়ে বলবিন্দর সিং একটি সুড়ঙ্গের উপরে দুই সন্ত্রাসবাদীকে দেখতে পান। এদিকে, তখনই বলবিন্দর সিং তাদের মোকাবিলা করতে গেলে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শত্রুরা বলবিন্দর সিংয়ের বুকে গুলি চালায়।

বলবিন্দর পাঁচ ঘণ্টা ধরে লড়াই করেন: বচ্চন কৌর আরও জানান যে, তাঁর ছেলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শিখ রেজিমেন্টের একজন সৈনিক ছিলেন। বলবিন্দর সিংয়ের গোলাবারুদ ফুরিয়ে না গেলে তিনি হয়তো শহীদ হতেন না। বচ্চনের মতে, বলবিন্দর সিং ৫ ঘণ্টা ধরে শত্রুর সঙ্গে লড়াই করেছেন। এমনকি, তাঁর কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বহু জওয়ানের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।

এই কারণে ছেলের জন্য একটি ঘর বানিয়েছেন: বচ্চন কৌর বলেন, ছেলের যাতে কোনো ধরণের সমস্যা না হয়, সেইজন্য তাঁকে সম্পত্তিতে তাকে ভাগ দেওয়া হয়েছে। একটি কক্ষ তৈরির পর সেখানে তাঁর জিনিসপত্রও রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বচ্চন কৌর জানান, সরকার ও প্রশাসন পরিবারকে যা কিছু দিয়েছে তাতেই তিনি সন্তুষ্ট।

Mother gave property share to her son who was martyred in Kargil war

এদিকে, বলবিন্দরের ভাই বুটা সিং এবং ভগ্নিপতি জাসবিন্দর কৌর জানান, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বলবিন্দর সিং-এর ঘরে প্রণাম করা হয় এবং তারপরে সমস্ত কাজ করা হয়। তাঁরা বলেন, বলবিন্দর সিংকে দেখে অনেক যুবক ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে। পাশাপাশি, মায়ের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে শহীদ বলবিন্দরের ভাই বুটা সিং জানিয়েছেন, মায়ের নেওয়া সিদ্ধান্ত একদম সঠিক। ২৪ বছর ধরে এভাবেই সমস্ত নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে বাড়িতে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর