বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিয়ে সরব প্রত্যেকেই। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও যে বর্তমানের পৃথিবীতে পিছিয়ে নেই তা বলাই বাহুল্য। দিন কয়েক আগেই কন্যা সন্তানদের সক্ষমতা প্রদর্শন এবং কেরিয়ার গড়ার লক্ষ্যে মহিলাদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর করা হয়েছে। এটা নিয়ে দীর্ঘ তর্ক-বিতর্ক চললেও এই আইন আমাদের দেশে কতটা কার্যকরী হবে সে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়!
তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে যা নিছকই কল্পনা মনে হলেও তা কঠিন বাস্তবে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই’র কথাই মনে করিয়ে দেয়। যে লড়াইটা লড়েছেন আইপিএস এন অম্বিকা! তামিলনাড়ুর এন অম্বিকা মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। তাঁর স্বামী ছিলেন পেশায় কনস্টেবল। ১৮ বছর বয়সেই দুই সন্তানের মা হন অম্বিকা। আর পাঁচজন গৃহবধূর মতোই সংসারে মন দিয়েছিলেন তিনি।
একবার ১৫ আগস্ট অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের দিন তিনি তাঁর স্বামীর সাথে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যান। সেখানে তিনি দেখেন যে, তাঁর স্বামী ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত অফিসারদের যাতায়াতের পথে স্যালুট করছেন।
আর এই বিষয়টিই নাড়া দেয় তাঁকে। মনে মনে অম্বিকাও পুলিশ অফিসার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে একটি বেসরকারি কোচিং সেন্টার থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। তারপর সংসার সামলানোর পাশাপাশি স্নাতকও হন। স্নাতক হওয়ার পরেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তিনি পৌঁছে যান চেন্নাই। সেখানে প্রস্তুতি নেওয়ার পরে, অম্বিকা ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। প্রথম এবং দ্বিতীয় পরীক্ষায় ব্যর্থ হন তিনি। তৃতীয় চেষ্টাতেও সফল হতে পারেননি অম্বিকা।
তবে, হাল না ছেড়ে অদম্য জেদ নিয়ে আরও একবার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। আর সেখানেই বাজিমাত করেন অম্বিকা। তাঁর চতুর্থ প্রচেষ্টায় ২০০৮ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। আইপিএস অফিসার হওয়ার পরই তিনি গ্রামে ফিরে আসেন।
এই প্রসঙ্গে অম্বিকা জানিয়েছেন যে, “যদি কেউ সত্যিই স্থির করে থাকেন যে আমি এই পরীক্ষাটি পাশ করতে চাই তাহলে প্রস্তুতি যে কোনো সময় শুরু করা যেতে পারে। এখন অনলাইনে পড়াশোনার এত বেশি মাধ্যম হয়েছে যে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া খুব সহজ হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন যে, “পড়াশোনায় ধারাবাহিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কতটা পড়েছেন, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি কী পড়েছেন সে সম্পর্কে আপনার গভীর জ্ঞান রয়েছে কি না!” পাশাপাশি, অম্বিকার এই উত্তরণের লড়াইতে তাঁর স্বামীর ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি।