বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি মাসের শুরুতেই অর্থাৎ মে মাসের ২ তারিখেই প্রকাশ্যে এসেছে মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট। কিন্তু ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পরেই এক পড়ুয়ার অভিযোগের উঠলো মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দিকে। জানা যাচ্ছে শুধুমাত্র মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উদাসীনতার কারণে নম্বর কমে যাওয়ায় একটুর জন্য নাকি সপ্তম স্থান হাতছাড়া হয়েছে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর।
ইতিমধ্যেই নাকি সেই মামলা গড়িয়েছে আদালত। এই মামলার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সমস্ত ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ শোনার পর ওই ছাত্রের দাবি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, সহানুভূতির সাথে তা মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানার অন্তর্গত জ্ঞানদীপ বিদ্যাপীঠের ওই ছাত্রের নাম সৌম্য সুন্দর রায়।
২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি মোট ৬৮২ নম্বর পেয়েছিলেন কিন্তু শুরু থেকেই এই নম্বর নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট ছিলেন না ওই পড়ুয়া। অভিভাবকদের তরফেও দাবি করা হয় সৌম্য তাঁর প্রাপ্য নম্বর পাননি। তাই জীবন বিজ্ঞানে নম্বর কম আসার সত্যিটা যাচাই করতেই সৌম্য জীবন বিজ্ঞানের খাতার পুনর্মূল্যায়নের জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন।
কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয় তার নম্বর নাকি পরিবর্তন করা যাবে না। তখন ওই ছাত্রের পরিবারের তরফে তার জীবন বিজ্ঞান খাতার প্রতিলিপি চেয়ে পাঠান। তখন খাতা চেক করে দেখা যায় সৌম্য সেখানে চারটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও তাকে এক নম্বর করে কম দেওয়া হয়েছে। আর এই কারণেই জীবন বিজ্ঞানে ১০০-র মধ্যে ৯৬ পেয়েছেন ওই পড়ুয়া।সেকথা জানিয়েই সৌম্য সুন্দরের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হলে অন্যান্য সাবজেক্টের মতোই হলে জীবন বিজ্ঞানেও একশোয় একশো পেত সৌম্য।
আরও পড়ুন: ভুলেও ফেলবেন না মাছের আঁশ! বরং এইভাবে ব্যবহার করুন, মোটা অঙ্কের লক্ষ্মীলাভ হবে আপনারই
প্রসঙ্গত ওই পড়ুয়ারা পরিবারের অভিযোগ মাধ্যমিকে যে ছাত্র দশম স্থান পেয়েছেন তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। আর সৌম্য আরও ৪ নম্বর পেলে তার প্রাপ্ত নম্বর হবে ৬৮৬। এদিন হাইকোর্টে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন,জীবন বিজ্ঞানে সঠিক মূল্যায়ণ হলে সৌম্য হয়ত প্রথম থেকে দশম স্থান পেতে পারত। সেইসাথে তিনি জানিয়েছেন সঠিক মূল্যায়ন না হওয়ার জন্যই ওই মেধাবী ছাত্র মানসিক অবসাদে ভুগছেন।
এরপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী কহেলি ভট্টাচার্যের কাছে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানতে চান, ‘এত ভাল মেধাবী ছাত্র যে সমস্ত বিষয় ১০০ এবং তার কাছাকাছি নম্বর পেয়েছে তাঁকে সাইন্সেও পুরো নম্বর দেওয়া উচিত যদি সে ঠিক লেখে। তাহলে কেন কম নম্বর দেওয়া হল?’সদুত্তর না মেলায় অবিলম্বে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে সৌম্য সুন্দরের আবেদন খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সহানুভূতির সঙ্গে তা মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। সেই সাথে পুরো বিষয়টি আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।