বাংলা হান্ট ডেস্ক: কূটনৈতিক চ্যানেল মারফত ভারতের প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে চার দিন আগে একটি বার্তা এসে পৌঁছয়। যেখানে জানানো হয় চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্কে সম্পন্ন হতে চলা রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের অবসরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)। যদিও, এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির তরফে এখনও এই “হ্যাঁ” বা “না” কোনওটাই জানানো হয়নি।
মোদীর সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসতে চান ইউনূস (Muhammad Yunus):
এমতাবস্থায়, দিল্লির আধিকারিকরা সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর আরও কিছুদিন নজর রাখতে চান বলে জানানো হয়েছে। কারণ, আধিকারিকরা মনে করছেন যে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ইউনূস (Muhammad Yunus) হয়তো শুধুমাত্র তাঁর দেশের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ভারতের সাথে সখ্যতা বৃদ্ধি করতে চাইছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের হু হু করে বাড়ছে খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ ভারত থেকে আরও আমদানি করতে চায়।
কিন্তু নয়াদিল্লির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিগত এক মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক পদক্ষেপ ভারতের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সবথেকে চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, গত একমাসে বাংলাদেশের আদালতের তরফে ভারত বিরোধী বহু জঙ্গিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায়, নিম্ন আদালতের আচমকাই এই তৎপরতার পেছনে ওপর মহলের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি।
এর পাশাপাশি, PITI-কে দেওয়া ইউনূসের (Muhammad Yunus) সাক্ষাৎকারকে ভালোভাবে নেয়নি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। যেখানে, ইউনূস হাসিনাকে আক্রমণ করার সাথে সাথে ভারত সরকারকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি এটাও জানিয়েছিলেন, ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মুখ বন্ধ না রাখলে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে অবনতি ঘটতে পারে। যা বর্তমানে কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
তবে, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যের ভারতের থেকে আর কোনও দেশ এগিয়ে নেই বলেই মনে করে ভারত সরকার। ইতিমধ্যেই ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টার পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। এদিকে, ইউনূস (Muhammad Yunus) বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রণয় ভার্মাকে দেখে পাঠানোর পর রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন যে ভারতের জলাধারের কারণেই বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে বন্যা দেখা যায়।
আরও পড়ুন: আর নেই চিন্তা! এবার টিম ইন্ডিয়া পেয়ে গেল দ্বিতীয় ধোনি, বিরাট নজির গড়লেন এই তরুণ খেলোয়াড়
সম্প্রতি, এটাও অভিযোগ উঠেছে যে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এক বাংলাদেশি তরুণী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে। যার ফলে শুরু হয় সমালোচনা। এমনকি বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে সুর চড়িয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এমন পরিস্থিতিতে, সামগ্রিকভাবে নয়াদিল্লির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের বাকি উপদেষ্টারা কম-বেশি প্রত্যেকেই ভারত বিরোধী সুর চড়িয়েছেন। আর এর প্রধান উদ্দেশ্য হল বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়কদের সু-নজরে থাকা। তাই সমস্ত দিক বিবেচনা করে, নয়াদিল্লি তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সাথে মোদীর বৈঠকের বিষয়টিতে সাড়া দেয়নি।