বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলায় একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ। আর এই মুহূর্তে বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলির চলছে সর্বনেশে দশা। কারণ টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে একমাত্র বাজার কাঁপাচ্ছে বিএসএনএল। একের পর এক মারাত্মক সব প্ল্যান এনে কুপোকাত করেছে বেসরকারি টেলিকম সংস্থাদের। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কপাল পুড়েছে জিওর (Jio)। এক ধাক্কায় খোয়া গেছে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক। মাত্র ৩০ দিনেই ৭৯ লক্ষ গ্রাহক হাতছাড়া হয়েছে জিওর (Jio)। নতুন বছর শুরুর আগেই মুকেশ আম্বানির ব্যবসায় বিরাট পতন। তবে এই তালিকায় বাদ যায়নি অন্যান্য টেলিকম সংস্থাগুলিও।
৩০ দিনে ৭৯ লক্ষ গ্রাহক হারালো টেলিকম সংস্থার জিও (Jio):
সম্প্রতি টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) তথ্য প্রকাশ করেছেন। ট্রাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি প্রত্যেকটি টেলিকম সংস্থা মিলিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় এক কোটি গ্রাহক হারিয়েছে। আর এই তালিকায় সর্বপ্রথমে রয়েছে মুকেশ আম্বানির জিও (Jio)। সেপ্টেম্বর মাস থেকেই গ্রাহকরা জিও পরিষেবার নেওয়া বন্ধ করেছে। যার ফলস্বরূপ আজ ৭৯ লক্ষ গ্রাহক জিও পরিষেবা থেকে দূরে সরে গিয়েছেন।
গ্রাহকহারা হয়েছে এয়ারটেল, ভোডাফোন: এছাড়াও জানা গিয়েছে, সুনীল মিত্তলের ভারতী এয়ারটেলের গ্রাহক কমেছে ১৪ লক্ষ। অন্য দিকে, VI গ্রাহক হারিয়েছে ১৫ লক্ষ। কিন্তু জিওর (Jio) তুলনায় ভোডাফোন, এয়ারটেলের ব্যবধান অনেকটাই কম। এদিকে বেসরকারি সংস্থাগুলির গ্রাহক সংখ্যা কমলেও সরকারি সংস্থা বিএসএনএলের (BSNL) গ্রাহক সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যে বিএসএনএলের নতুন গ্রাহক সংখ্যা প্রায় কয়েক লক্ষ।
কত গ্রাহক বিএসএনএল-এর প্রতি ঝোঁক বাড়িয়েছে: একসময় বিএসএনএলের পরিষেবার প্রতি কারোরই কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু এদিকে সম্প্রতি জানা গিয়েছে, জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে ৫৫ লক্ষ গ্রাহক অন্য সংস্থা থেকে বিএসএনএলে নম্বর পোর্ট করিয়েছে। অল্প খরচ হওয়ার কারণেই বিএসএনএলের প্রতি আস্থা বাড়িয়েছেন গ্রাহকরা।
আরও পড়ুনঃ মিস ওয়ার্ল্ডের মঞ্চে প্রথম দেখা, প্রিয়াঙ্কা তখন ১৮-র তরুণী, স্বামী নিকের বয়স কত ছিল জানেন?
ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশনের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসেই ১৫ লক্ষ গ্রাহক জিও (Jio), ভোডাফোন, এয়ারটেলের মতো সংস্থা থেকে বিএসএনএলের গ্রাহক হয়েছেন। এমনকি অগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সংখ্যাটা ক্রমশ বেড়েছে। এই তিন মাসে গ্রাহক সংখ্যা যথাক্রমে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লক্ষ, ১১ লক্ষ ও ৭ লক্ষ।
আরও পড়ুনঃ রাত পোহালেই বৃষ্টি শুরু! দক্ষিণবঙ্গের কোন কোন জেলা ভিজবে? আবহাওয়ার আগাম আপডেট
ঠিক কি কারণে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে: চলতি বছরের জুন মাসে প্রত্যেকটি বেসরকারি সংস্থা ট্যারিফ রেট বৃদ্ধি করে। দেখা যায়, ১১ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। আর তারপর থেকেই সকলের পছন্দ এবং মনের পরিবর্তন ঘটেছে। জুন মাস থেকেই লক্ষ লক্ষ গ্রাহক সিম পোর্ট করিয়ে বিএসএনএলে (BSNL) চলে আসে। যদিও এই পরিবর্তনে উচ্ছ্বসিত ভারত সরকার। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেছেন, “ব্যবসা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিএসএনএলের বিরাট সুযোগ রয়েছে।” কিন্তু এদিকে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে।