অনুব্রত মণ্ডলের গ্রামে খুন বিজেপি কর্মীর মা,থমথমে নানুর

Published On:

নিজস্ব প্রতিনিধি,বোলপুর,বীরভূমঃ বীরভূমে তৃনমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নিজস্ব এলাকা বীরভূমে নানুর থানার অন্তর্গত হাটসেরান্দি গ্রাম। অভিযোগ,সেখানেই আজ অর্থাৎ সোমবার বিজেপি কর্মীর মা শঙ্করী বাগদিকে গুলি করে খুন করে তৃনমূল আশ্রিত দুস্কৃতিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামে আজ তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।সংঘর্ষকে ঘিরে চলে গুলি। গুলির আঘাতে মৃত্যু হয় ওই এলাকায় বিজেপি কর্মী উদয় বাগদির মা শঙ্করী বাগদির। অভিযোগ,ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করে আসছে উদয় বাগদি। সেই বিজেপি করার অপরাধে উদয় বাগদিকে তৃনমূলের বেশকিছু কর্মী হুমকি দিয়ে যায় বেশ কিছুদিন আগে। কিন্তু সেই হুমকিকে সে গুরুত্ব না দিয়ে ফের বিজেপি করতে শুরু করে। এরফলে ওই গ্রামের পাশে মালপাড়া থেকে তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহীনি এসে পশ্চিম পাড়ায় আক্রমণ চালায়। গুলি চলার পাশাপাশি চলে মারধর। এই ঘটনায় পশ্চিমপাড়ার বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হওয়ার পাশাপাশি গুলিতে মৃত্যু হয়েছে উদয় বাগদির মা শঙ্করী বাগদির।

অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে,বিজেপি কর্মী উদয় বাগদিকে লক্ষ্য করেই গুলি করতে আসে দুস্কৃতিকারীরা। কিন্তু সেই সময় তার মা তাকে বাঁচাতে সামনে চলে এলেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

মৃতদেহটিকে ঘিরে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মৃতদেহটিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ওই এলাকার বাসিন্দারা। দাবি,যতক্ষণ পর্যন্ত দোষীদের না ধরতে পারছে পুলিশ, ততক্ষণ দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হবে না।

ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘটনায় এক দল আরেক দলকে দোষারোপ করতেও পিছপা হচ্ছে না।ইতিমধ্যেই পুলিশ দেহ তুলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় একটা চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে,মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। ঘটনাটির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নানুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এখনো থমথমে নানুর থানার হাটসেরান্দি গ্রাম।

মৃত ওই মহিলার আত্মীয় বৈদ্যনাথ বাগদি জানান,“মালপাড়ার খুদু বাগদি, কালাম বাগদি, সন্তোষ বাগদি, রঘুনাথ বাগদি, মেনকা বাগদি, মিলন বাগদি আরো কয়েকজন দল বেঁধে বন্দুক, আরো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। তারপর আমাদের কয়েকজনকে মারধর করে শঙ্করী বাগদীকে গুলি করে দিয়ে চলে যায়। গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।”

এই ঘটনায় তৃনমূলকে দোষারোপ করে বীরভূমের বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন,“ওটা অনুব্রতবাবুর গ্রাম।আর লোকসভা ভোটে বিজেপি ২২৩ ভোটে লিড পেয়েছে। এটাই কারণ। আর সেইদিন থেকেই ওরা বিজেপি যারা করে তাদের উপর নানা অত্যাচার করে আসছে। আর যেদিন থেকে বিজেপি তৃনমূল দলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে সেইদিন থেকেই ওদের সন্ত্রাস শুরু হলো। আর সেই সন্ত্রাসের বলির শিকার হলো শঙ্করী বাগদি। তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো। তৃনমূল তো এখন একের পর এক খুন করবে,সন্ত্রাস করে,আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। এই রাজনীতি তো এখন তৃনমূলের শুরু হয়েছে। আর এই সমস্ত বিষয়ে পুলিশ তাদেরকে মদত করবে। আর আজকের ঘটনায় আমরা আবারও প্রশাসন ও তৃনমূলকেই দায়ী করলাম। এইদিকে দেখুন তিন চার মাসের মধ্যে বীরভূমে ৬-৭ টা খুন হয়ে গেল। এটা কী চলছে? কাশ্মীরে এত খুন আছে? বীরভূমে এত খুন চলছে আর ওইদিকে বীরভূমে তৃনমূলের বড়ো নেতা বলছে,চরম শান্তি,চরম উন্নয়ন চলছে। আর তারই নমুনা মাসে তিনটে,চারটে করে খুন।”

এইদিকে বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা বলেন,“মৃতার ভাইও বিজেপি করে বলে শাসকদলের ভয়ে গ্রাম ছাড়া।”

X