বাংলা হান্ট ডেস্ক : কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তা সে ভালোবাসা হোক কিংবা স্নেহ-মায়া-মমতা। মেয়ে অন্ত প্রাণ ছিল মায়ের। নিজে অসুস্থ ছিলেন স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। কিন্তু ওই অবস্থাতেও মেয়েকে সারাক্ষণ আগলে রাখতেন মা। আর সেই মা’ই কিনা নিজের হাতে, গলা টিপে খুন (Murder) করলেন মেয়েকে।
মেয়েকে খুন (Murder) করল মা
কারণ কারণটা খুবই অস্বাভাবিক। চারপাশের ঘটনায় বিচলিত মা। মেয়ে বড় হচ্ছে দিনকাল ভালো নয়। পরে কেউ তার ক্ষতি না করে দেয়, সেই আশঙ্কায় নিজেই মেয়ের গলা টিপে খুন (Murder) করে দিলেন মা। ব্যারাকপুরের আনন্দপুরী ডি রোডের এই খুনের (Murder) ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। ঘটনায় কার্যত বাকরুদ্ধ মৃত কন্যার বাবা তাথা ওই মহিলার স্বামী ইন্দ্রজিৎ ঘোষ।
মানসিক ভাবে অসুস্থ মা
খুনি মা কবিতা ঘোষের কান্ড দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছেন গোটা এলাকাবাসী। মেয়ের মৃত্যুতে শোকোস্তব্ধ বাবা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন তার স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ। স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত বহু দিন ধরে। কিন্তু নিজে অসুস্থ হলেও মেয়েকে সারাক্ষণ আগলে রাখতেন। মেয়েকে ছাড়া এক মুহূর্ত-ও চলতো না তার।
শ্যামনগরের গাঙ্গুলী পাড়ার বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ ঘোষের সাথে বছর ১৫ আগে বিয়ে হয়েছিল কবিতা ঘোষের। তাদেরই একমাত্র মেয়ে রাজন্যা ঘোষ। এলাকারই এক বেসরকারি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল সে। কিছুদিন আগেই স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে ব্যারাকপুরের আনন্দপুরের ডি রোডে বসবাস শুরু করেন ইন্দ্রজিৎ বাবু।
আরও পড়ুন : গুরুত্ব হারাচ্ছে আধার কার্ড! বয়স প্রমাণে এই সার্টিফিকেটকেই মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্ট
কি ঘটেছিল সেদিন?
প্রতিদিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আলাদা ঘরেই ঘুমোতেন কবিতা। শুক্রবারেও মেয়ের সাথে আলাদা ঘুমোন তিনি। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও দরজা খোলেননি কবিতা। অনেক ডাকাডাকির পরেও সাড়া না মেলায় বাধ্য হয়েই দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন ইন্দ্রজিৎ বাবু। তিনি দেখেন বিছানায় শুয়ে আছে মেয়ে। দেখে মনে হবে যেন ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু মেয়েকে ওভাবে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় ইন্দ্রজিৎ বাবুর।
অন্যদিকে ঘরের মধ্যে পায়চারি করছেন মা কবিতা। আর মুখে বিড়বিড় আওড়ে চলেছেন, ‘মেয়ে বড় হচ্ছে। ওর উপরে অন্যেরা অত্যাচার করবে, এটা হতে পারে না। আর কেউ ওর কিছু করতে পারবে না।’ ইন্দ্রজিৎ বুঝতে পারেন তাঁর স্ত্রীর আচরণ একেবারেই স্বাভাবিক ছিল না। তখনই মৃত মেয়েকে বিশ্বাস করে উঠতে পারছিলেন না তিনি কি করবেন। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই ওই মহিলাকে গ্রেফতার করছে টিটাগর থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান মা কবিতাই শ্বাসরোধ করে মেয়েকে খুন করেছেন।