নানুরে টুকরো,টুকরো করে খুন সিপিআইএম নেতাকে,দুটি বস্তাবন্দী দেহ উদ্ধার করলো পুলিশ

টুকরো,টুকরো করে মৃতদেহ কেটে দেহ লোপাট করতে দুটো বস্তায় ভরে একটি বস্তা দুবরাজপুরের নদীর চরে ও একটি বাঁশ বাগানে ফেলে দেয়। পরে ওই দুটি বস্তা উদ্ধার করে পুলিশ। 

 

নিজস্ব প্রতিনিধি,বোলপুর,বীরভূমঃ অবশেষে তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর সিপিআইএম নেতার দুটি বস্তাবন্দী দেহ উদ্ধার করলো বীরভূমের নানুর থানার পুলিশ। মৃতার নাম সুভাষচন্দ্র দে (৫৮)। এই খুনের ঘটনায় সোনালি বিবি ও মতিউর রহমান নামে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান,বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন করা হয়েছে সুভাষবাবুকে।

জানা গেছে,নানুরের বাসাপাড়া এলাকায় সিপিআইএমের সক্রিয় নেতা ছিলেন সুভাষচন্দ্র দে। এমনকি নানুরের সুঁচপুর গণহত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। পরে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হন। ১৮ অক্টোবর থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। নানুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেন সুভাষবাবুর ভাই লক্ষ্মীন্দর দে। তারপর থেকেই তাঁর খোঁজ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু এইদিকে সুভাষবাবুর মোবাইল লোকেশন দেখে রহস্য আরোও জটিল হচ্ছিল। আজ তাঁর টুকরো,টুকরো দুটি বস্তাবন্দী দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুবরাজপুরের খোয়াজ মামুদপুরের বাসিন্দা সোনালি বিবির সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল সুভাষবাবুর । তার জেরেই এই খুন।

পুলিশ সূত্রে খবর,বাসাপাড়ার সিপিআইএমের অত্যন্ত বলিষ্ট নেতা সুভাষচন্দ্র দে’কে মতিউর রহমান তার বিবির সঙ্গে দেখে ফেলে। সেই ক্ষোভে সুভাষবাবুর মাথায় মতিউর রহমান রড দিয়ে সজোরে আঘাত করে। দেহ লোপাট করতে মৃতদেহটিকে টুকরো,টুকরো করে কেটে দুটি বস্তায় ভরে। তারপর সেখান থেকে একটি বস্তা দুবরাজপুরের একটি নদীর চরে ফেলে আসা হয়। আর একটি বস্তা বাঁশ বাগানে ফেলে আসা হয়। যদিও আজ সেই দুটি বস্তাবন্দী দেহ উদ্ধার করে নানুর থানার পুলিশ ।

IMG 20191021 141557

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,নানুর এলাকার বাসাপাড়ায় সুভাষবাবু যেমন সিপিআইএম’এর নেতা ছিলেন তেমনি LIC-র এজেন্টোও ছিলেন। তিনি গত ১৮ই অক্টোবর সকাল ৭:৩০ মিনিটে বাড়ি থেকে বোলপুরে এলআইসি অফিস যাবার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যান। অফিসে কাজ সেরে অপর একজন এজেন্ট ইলামবাজারের নাসির সেখকে সঙ্গে নিয়ে ইলামবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। নাসিরকে ইলামবাজারে নামিয়ে সুভাষবাবু জয়দেব মোড় যাবেন বলে বেরিয়ে যান। শেষ মোবাইল লোকেশন অনুযায়ী রাত্রি ৮:৩০ মিনিটে জয়দেব মোড়ের নিকট রাউতারা (শিবপুর) গ্রাম। কিন্তু তারপর থেকে উনার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি। কিন্তু এইদিকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় এবং মোবাইল অফ থাকায় বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাতেই ইলামবাজার থানায় জানানো হয়। পরদিন সকাল থেকে আবার খোঁজ শুরু হয়। পাশাপাশি সকাল ৮ টা নাগাদ নানুর থানায় মিসিং ডাইরিও করা হয়। সারাদিন অনেক খোঁজাখুঁজির পর বৈকাল ৬টা নাগাদ বাসাপাড়ার কাছেই বঙ্গছত্র গ্রামে একটি ডি.এড. কলেজের গেটের সামনে সন্ধান পাওয়া যায় সুভাষ বাবুর বাইকের। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে গাড়িটি নিয়ে যায় বাসাপাড়া ফাঁড়িতে।

সত্যিই কী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন হতে হলো সুভাষবাবুকে? নাকি এর পিছনে কোন রাজনৈতিক কারণ লুকিয়ে রয়েছে? তদন্তে পুলিশ।

বামফ্রন্টের রাজ্য কমিটির সদস্য গৌতম ঘোষ । প্রতিক্রিয়া দিলেন নানুরে বাসাপাড়ার সিপিআইএম’এর নেতা সুভাষ চন্দ্র দে খুনের ঘটনায়……শুনুন বক্তব্য


সম্পর্কিত খবর