বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিজয়া দশমী মানেই মা দুর্গার ঘরে ফেলার পালা। তাই চারিদিকে বিষাদের আবহ। সেদিন সকালেই দাদুর বাড়িতে ঘুরতে এসে নৃশংসভাবে খুন হয়েছিল মাত্র ১০ বছরের এক নাবালিকা। পরদিন সকালে এক প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল তার বস্তা বন্দী দেহ। আর জি কর আবহেই জয়নগরের পর ফারাক্কার (Farakka) এই নারকীয় ধর্ষণ (Rape)-খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য।
ফারাক্কার নাবালিকা ধর্ষণ (Rape)-খুনের ঘটনায় যুগান্তকারী রায়
এই ঘটনার তদন্তে নেমে গ্রামেরই স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী দীনবন্ধু হালদার (৪৬) এবং তারই বন্ধু শুভজিৎ হালদারের (২৩)-কে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সে সময় পুলিশের জেরার মুখেই দুই অভিযুক্ত স্বীকার করেছিল ফুল দেওয়ার নাম করে তারা ওই নাবালিকাকে নিজের ঘরে ডেকে গিয়েছিল। সেখানে দীনবন্ধু আর তার বন্ধু শুভজিৎ মিলে নাবালিকাকে ধর্ষণ (Rape) করে খুন করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়না তদন্তের রিপোর্টেও স্পষ্ট ধর্ষণের (Rape) ইঙ্গিত ছিল। পাশাপাশি, নির্যাতিতার শরীরের সারা জায়গায় ছিল আঘাতের চিহ্ন। ময়নাতদন্ত করে দেখা গিয়েছিল মেঝেতে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছিল নির্যাতিতাকে। ভেঙে গিয়েছিল তার গলার হাড়ও। নির্যাতিতাকে খুনে ব্যবহৃত কাপড়ের টুকরো, আর তার রক্তমাখা পোশাকের ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হয়েছিল।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকেও অভিযুক্তের হাতের ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাছাড়া দীনবন্ধুর বাড়ির কল পাড়ে দু’টি সিগারেটের টুকরোও পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। ফরেন্সিক পরীক্ষা করে ওই সিগারেটের নমুনার সঙ্গে হুবহু মিলে গিয়েছিল নাবালিকার পোশাকে লেগে থাকা বীর্যের নমুনা। অক্টোবর মাসের এই ঘটনার ঠিক দু মাসের মাথায় বিচার শেষ করে বৃহস্পতিবারই দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল জঙ্গিপুর আদালত।
আরও পড়ুন: ‘দ্রুত তালিকা প্রকাশ করুন’, বিরাট নির্দেশ দিয়ে দিল হাইকোর্ট, কাদের খুলছে কপাল?
আর শুক্রবার রায় ঘোষণার পর একজনের ফাঁসি এবং অপরজনের যাবজ্জীবনের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন জঙ্গিপুর ফার্স্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক। পাশাপাশি নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগেই আরজিকর কান্ডের আবহে জয়নগরের নাবালিকাকে ধর্ষণ খুনের ঘটনায় দুই মাসের মধ্যেই বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দোষীকে ফাঁসির সাজা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বারুইপুর আদালত।
জানা যাচ্ছে,মূল অভিযুক্ত দীনবন্ধুর ফাঁসির সাজা হয়েছে আর শুভজিৎ -এর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। জয়নগরের পর এই ফারাক্কা কান্ডেও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘আগেও বলেছি, আবার বলছি। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি। সুষ্ঠু ভাবে সময়ের মধ্যে তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা আসলে সেই সব অপরাধীদেরই বার্তা দেওয়া যে, এই অপরাধ সহ্য করা হবে না।’ অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত বিচার অধরা আরজিকর কান্ডের। তবে ন্যায় বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুণছেন তিলোত্তমার বাবা-মা।