বাংলা হান্ট ডেস্ক : ভারত (India) ধর্মনিরপেক্ষতার দেশ। এখানে দুর্গাপুজো, মহরম, খ্রিস্টমাস, গুরু পূর্ণিমা, বুদ্ধ জয়ন্তী এক সঙ্গে, একই উদ্দীপনাশ উদযাপন করা হয়। এবার এক অসামান্য ধর্ম নিরপেক্ষতার উদাহরণ প্রস্তুত করলে৷ ইরশাদ আলী। বেনারসের গঙ্গা মাটি এবং গঙ্গাজল দিয়ে সুতির কাপড়ে লিখে ফেললেন আস্ত ভগবত গীতাই। তাঁর শিল্প দেখে তাক লেগে যাচ্ছে সকলের।
ইরশাদ আলী উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা। সাদা সুতির কাপড়ে লিখে ফেলেছেন গোটা গীতাটাই। লেখার উপকরণ গঙ্গাজল ও বেনারসের পবিত্র গঙ্গামাটি। অপূর্ব সুন্দর তাঁর সেই শিল্পকর্ম। মুক্তর মতো ঝকেঝকে হাতের লেখা ফুটে উঠেছে সাদা কাপড়ে। শুধু গীতাই নয়, লিখে ফেলেছেন হনুমান চালিসাও। লিখেছেন ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা অংশও।
ইরশাদ জানান, এটা তাঁদের বংশানুক্রমিক শিল্প। তাঁর বাবাও এই একই কাজ করতেন। ৮০ বছর বয়সে তাঁর হাত কাঁপতে শুরু করলে এই শিক্ষা দিয়ে জান নিজের ছেলেকে। আম ইরশাদের কাজে হাত লাগান তাঁর ছেলেও। একটি সুতির কাপড়। বেশ বড় কাপড়। তারপর ওপর পেশায় ব্যবসায়ী ইরশাদ মন দিয়ে লিখে ফেলেন ভগবদগীতা। যাতে সংস্কৃত শ্লোক লেখায় ভুল না হয় সেজন্য তিনি সংস্কৃত কিছুটা শিখে নিয়েছিলেন। ইরশাদ জানান, যেখানে আটকে যাচ্ছিলেন সেখানে সংস্কৃত জানা পণ্ডিতদের সাহায্য নিয়েছিলেন।
এই কাপড়ের ওপর ভগবদগীতা লিখে তিনি তা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উপহার হিসাবে দিতে চান। গঙ্গাজলে, গঙ্গা মাটি পরিমাণমত মিশিয়ে তাতে গঁদ বা আঠা মিশিয়ে দেন হাজি ইরশাদ আলি। বারাণসী শহরের এই ৫৩ বছর বয়স্ক প্রৌঢ়ের বিশেষ কালিটি রীতিমত সকলের নজর কেড়েছে। ভগবদগীতাকে কাপড়ের ওপর লিখতে গঙ্গা মাটি ও গঙ্গাজলের ব্যবহার পুরো বিষয়টিকে অন্য এক মাত্রা দিয়েছে।
শুধু কাপড়ের ওপর ভগবদ গীতা লেখাই নয়, এই ব্যবসায়ী এর আগেও সুতির কাপড়ের ওপর মুসলিম ধর্মগ্রন্থ কোরান লিখে ফেলেছেন।হাজি ইরশাদ আলি যখন কিশোর বয়সে ছিলেন, তখন থেকেই তিনি কাপড়ের ওপর ধর্মীয় গ্রন্থ লিখে ফেলা রপ্ত করতে শুরু করেন। এবার বারাণসীতে বসে কাপড়ের ওপর গঙ্গা মাটি, গঙ্গাজল দিয়ে গীতা রচনা করে তিনি রীতিমত আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন।