বাংলা হান্ট ডেস্ক : মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ (Muslim Reservation) সাংবিধানিক নয়। তাই এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা অবিলম্বে তুলে দেওয়া উচিত। বিজেপি (Bharatiya Janata Party) শাসিত কর্নাটক সরকার তাই আগেই এই ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। তেলেঙ্গানা (Telengana) থেকেও এই ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হবে।
তেলেঙ্গানায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এমনই ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ মোটেই সাংবিধানিক নয়। বিজেপি শাসিত কর্নাটক ইতিমধ্যেই মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ বাতিল করেছে।
অমিত শাহ বলেন, এর আগে কংগ্রেস সরকার মুসলিমদের ওই সংরক্ষণ দিয়েছিল রাজনৈতিক স্বার্থে। অমিত শাহ বলেন, সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ সাংবিধানিকভাবে বৈধ নয়। তিনি আরও বলেন যে, ধর্মের নামে সংরক্ষণের কথা একবারও বলা হয়নি সংবিধানে। উল্লেখ্য, ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় ৪ শতাংশ মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ সরিয়ে দিয়ে, সেই জায়গায় লিঙ্গায়েত ও ভোক্কালিগা সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
অমিত শাহ মুসলিমদের সংরক্ষণের জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেন বটে, বাস্তবে ওই সংরক্ষণ শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। তখন ক্ষমতায় জনতা দল, মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এইচ ডি দেবগৌড়া। প্রশ্ন উঠছে, এই তথ্য কি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নেই? কংগ্রেসের বক্তব্য, জেনে বুঝে ভোটের আগেভাগে কংগ্রেসকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এইসঙ্গে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের রাজনীতির ফায়দা তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। এর ফলেই সরকারের সিদ্ধান্ত এবং অমিত শাহর বক্তব্যে ভীষণ খুশি রাজ্যের বিজেপি নেতারা। তাঁরা বলছেন, মেরুকরণের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে ভোটের বাক্সে। মূল উদ্দেশ্য তো সেটাই।
কর্নাটকে মুসলিম সংরক্ষণ কোটা খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করেছেন আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে৷ মঙ্গলবার তিনিই আদালতে জানান, কী ভাবে নির্বাচনী প্রচারে বিষয়টিকে তুলে ধরছেন শাহ। তা শুনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্নের বক্তব্য, ‘আপনি যা বলছেন তা যদি সত্যি হয়, আমরা এটা ভেবে অবাক হয়ে যাচ্ছি, কী ভাবে উচ্চপদে আসীন একজন জনপ্রতিনিধি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে এমন মন্তব্য করলেন?
সংরক্ষণ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভের সঙ্গে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার রীতিমতো উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়৷ দাভের বক্তব্য ছিল, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন কর্নাটকে মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ অবৈধ এবং বিজেপি তা খারিজ করেছে৷ এটা আদালত অবমাননা৷’ এর পরেই বিচারপতি নাগরত্ন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম না করেই তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷