বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সারোগেসি (Surrogacy) মাদার, বর্তমান সময়ে এই শব্দটার সঙ্গে আমরা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছি। তা সে সেলুলয়েডের পর্দা হোক কিংবা বাস্তবের মাটি। বর্তমান সময়ে অনেকে দম্পতিই আছেন, যারা নিজেদের কিছু শারীরিক সমস্যার কারণে সারোগেসির মাদারের মাধ্যমে নিজেদের সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন।
একদিকে যেমন শারীরিকভাবে অক্ষম দম্পতিরা সারোগেসি মাদারের মাধ্যমে তাদের জীবনে নতুন আলোর সঞ্চার পাচ্ছেন, তেমনই অন্যদিকে সারোগেসি মায়েরা এইভাবে অন্যের মুখে হাসি ফুটিয়ে নিজের সংসারও চালাচ্ছেন। এইভাবে সারোগেসি পদ্ধতির মাধ্যমে এক সন্তানের জন্ম দিয়ে মানবিকতার নজির গড়লেন গুজরাট (Gujarat) রাজ্যের রাজকোট শহরে এক মুসলিম মহিলা (muslim woman)।
সেনাবাহিনীর ১৬বি বিহার রেজিমেন্টের অবসর প্রাপ্ত অফিসার গজেন্দ্র সিং-এর এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান ছিল। কিন্তু মাত্র ১৯ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তাঁর ছেলে মারা যায়। এরপর থেকেই অবসর প্রাপ্ত জীবনে গজেন্দ্র সিং এবং তাঁর স্ত্রী খুবই ভেঙ্গে পড়েন। তারা অনেক চেষ্টা করেও শারীরিক অসুবিধা থাকার দরুন আর সন্তানের জন্ম দিতে সক্ষম হয় না।
এই পরিস্থিতিতে তারা যখন বিভিন্ন চিকিৎসকের দরজায় দরজায় ঘুরছেন, তখন তাদের পরিচয় হয় ডাঃ ভবেশ ভিথালানীর সঙ্গে। এই চিকিৎসক তখন তাদের সারোগেসি মাদারের কথা বলেন এবং রাজকোটের বাসিন্দা আফসানার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সকলের সম্মতিতেই আইভিএফ থেকে টেস্ট টিউবে ভ্রূণের বিকাশ হওয়ার পরে আফসানার গর্ভে স্থাপন করা হয়। প্রথম প্রচেষ্টাতেই সফল হয় এবং আফসানা চলতি বছর আগস্টে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
আফসানা কিন্তু একজন ব্যবসায়িক সারোগেসি মাদার ছিলেন না, আবার ধর্মে তিনি মুসলিম ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইন্টারনেট দেখে সমস্ত হিন্দু ধর্মের আচার অনুসরণ করে, এমনকি সন্তান জন্মানোর আগে পর্যন্তও তিনি নিরামিষ খাবার খেয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে এই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্মানোর পর কিছুদিন তাঁর কাছে রেখে, তারপর গজেন্দ্র সিং-এবং তাঁর স্ত্রীয়ের হাতে তাদের সন্তানকে তুলে দেন। সন্তানকে পেয়ে তারাও খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। আর এদিকে যেই আফসানার কথা শুনছেন, সকলেই তাঁকে অনেক প্রশংসা করছেন।