বাংলা হান্ট ডেস্ক: হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এর শাসনকালে পৃথিবীর সবথেকে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বেশ খানিকটা সংকটে।
অনেকে বলছেন, মোদির আমলে মুসলিম বিরোধী ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমদের হেনস্তা করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের ধারণা মোদি ক্ষমতায় আসলে সংকটে পড়তে পারে মুসলিম অস্তিত্ব।
বিজেপির বহু নেতা মুসলিমদের কটাক্ষ করে হিন্দু ধর্ম সংরক্ষণের কথা বলেছেন।
নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই আসামের ব্যবসায়ী শওকত আলী কে গোমাংস বিক্রি করায় হেনস্তা করেন একদল হিন্দুত্ববাদী মানুষ। শওকত আলীকে কাঁদার মধ্যে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করা হয়।এ ঘটনায় শওকত আলী তার ধর্মাবেগে আঘাত পায়।
গত বছর জানুয়ারিতে কাশ্মীরের কঠুয়া জেলায় আট বছর বয়সী একটি মুসলিম মেয়ে ঘোড়াকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যাবার পথে অপহৃত হয়। জানা যায় এক সপ্তাহ ধরে তাকে হিন্দু মেন মন্দিরের ভেতরে আটকে রেখে গণধর্ষণ করা হয়। তার উপর প্রয়োগ করা হয় চেতনানাশক এবং শেষে হত্যা করা হয় মেয়েটিকে।
পরে পুলিশ রিপোর্ট জানায়, মেয়েটি ছিল যাযাবর বাকারওয়াল সম্প্রদায়ের। ওই সম্প্রদায় কি শিক্ষা দিতে একদল হিন্দু পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটায়।৮ বছরের ওই মেয়েটিকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যার প্রতিবাদে দোষীদের সাজা চেয়ে রাস্তায় নেমেছিল হাজারো মানুষ। কিন্তু দোষী হিন্দুদের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। নিজের পরিবারকে প্রাণ কেড়ে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম পদক্ষেপ তিনি নেন নি।
এরকম বহু ঘটনার নজীর রয়েছে। ঘটনাগুলিকে পরপর সাজালে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় মুসলিমদের অপুর অত্যাচার নতুন ঘটনা নয়।বিজেপি মূলত হিন্দুত্ববাদী একটি দল। তাদের মূল লক্ষ্য ভারত কে স্বাধীন হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা।
কিন্তু ভারতের প্রতিষ্ঠা লগ্নে ভারতের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল ভাষা ধর্ম তথা আত্মিক ঐক্য। এমনকি ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ ভারতবাসীদের মধ্যে এক অতুলনীয় ঐক্য দেখে ভারতীয় সভ্যতাকে “বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য” ( Unity in the midst of diversity) বলে অভিহিত করেন। সেখানে ভারতের শাসক দলের হিন্দু মনস্ক এই মনোভাব শুধুমাত্র অন্যান্য সম্প্রদায়গুলি নয়, ভারতীয় ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য কে সংকটের মুখে ফেলেছেন।