বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলা সাহিত্যের দিকপাল লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাকাবাবুর সিরিজের মিশর রহস্যের কথা তো জানেন সকলেই। তবে এবার এক নতুন রহস্য ঘনীভূত হয়েছে পিরামিডের দেশ মিশরের (Mishawr) মাটির গভীরে। মিশর মানেই পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে নানান অজানা রহস্য (Unknown Secret)।
সেখানেই এবার একটি প্রাচীন সমাধিক্ষেত্রের নিচে এক দারুন রহস্যময়ি বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। তাঁদের দাবি রহস্যজনক এই বস্তুটিকে দেখতে নাকি এই খানিকটা ইংরাজি ‘L’ অক্ষরের মতো। তবে যেহেতু বস্তুটি একটি সমাধিক্ষেত্রের নিচে ছিল তাই রহস্য দানা বাঁধছে আরও বেশি করে।
হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীদের দাবি রিমোট সেন্সিং পদ্ধতির মাধ্যমে গিজার পশ্চিম দিকের মাটির অনেকটা গভীরে তারা এই অদ্ভুত জিনিসটিকে খুঁজে পেয়েছেন। সেখানে বহু বছর আগে যে সমাধি ক্ষেত্র ছিল সেকথা উল্লেখ করে ভূ-প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবি ২৬০০ থেকে ২১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিশরের রাজ পরিবারের বহু সদস্যকে গিজার পশ্চিম প্রান্তে কবর দেওয়া হয়েছিল।
১৯২৫ সালে জর্জ রেস্নার নামে এক প্রত্নতত্ত্ববিদ সেখান থেকে রানি হেতাফেরাস ওয়ানের কবর খুঁজে পেয়েছিলেন। সেসময় রানির কবরের মধ্যে থেকেই উদ্ধার করা হয়েছিল নানা ধরনের মূল্যবান গয়না, আর আসবাব। তবে এদিন বিজ্ঞানীরা যে রহস্যময় বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন তার আকার আয়তন এবং মাটির গভীরতা বোঝার জন্য র্যাডারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ভারতীয় রেলের বড় উপহার! বাংলার বিখ্যাত এই স্টেশন এবার হল জংশন
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁরা জানতে পেরেছেন ওই বস্তুটি নাকি মাটি থেকে সাড়ে ছ’ফুট নিচে রয়েছে। ইংরেজি এল আকৃতির এই বস্তুটির আনুমানিক দৈর্ঘ্য ১০ মিটার। প্রত্নতত্ত্ববিদদের একাংশ দাবি করেছেন প্রাচীন মিশর সভ্যতায় যে প্রার্থনা গৃহ তৈরি করা হতো তা অনেকটা এই ইংরাজী ‘L’ অক্ষরের মতোই ছিল। কিন্তু সেগুলি মাটির এত গভীরে থাকার কথা নয়।
বিজ্ঞানীদের কথায় জানা গিয়েছে এই কাঠামো আগে নির্মাণ করার পর বালি এবং কাঁকর দিয়ে তা ভর্তি করেছিলেন কারিগরেরা। প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবি এই এলাকার কাছেই রয়েছে সাড়ে চার হাজার বছরের পুরনো ‘গ্রেট পিরামিড।’ তাছাড়াও ফারাও খুফুর পরিবারের কোনও সদস্য অথবা কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকের দেহ-ও সেখানে কবর দেওয়া হয়েছে বলে অনুমান করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
তবে ওই বস্তুটি যে মাস্তাবা সমাধিস্থলের ধ্বংসাবশেষ নয় একথাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, বলেই মনে করছেন প্রশ্নতত্ত্ববিদরা। তবে আপাতত খননকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সবাইকে। প্রসঙ্গত অজানা রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ২০২১ সাল থেকেই মিশরে ‘রিমোট সেন্সিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু করেছিলেন জাপানের হিগাশি নিপন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, তোহোকু ইউনিভার্সিটি এবং মিশরের ন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড জিওফিজিক্সের বিজ্ঞানীরা।