কড়াকড়ি! পঞ্চম থেকে প্রথম? এবার টার্গেট বেঁধে দিল নবান্ন 

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ খাদ্য ও পানীয়ের গুণগত মান নিশ্চিত করতে এবার আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। ভেজাল রুখতে এবার আরও  তৎপর হলো নবান্ন (Nabanna)। একইসাথে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার পক্ষেও চালানো হবে ব্যাপক সচেতনতার প্রচার। এবার এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে নবান্নের তরফে প্রত্যেক জেলায় খাদ্য পরীক্ষাগার স্থাপন, ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগারগুলির কার্যকারিতাও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পাশাপাশি আরও একাধিক পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

ভেজাল রুখতে বিরাট সিদ্ধান্ত নবান্নের (Nabanna)

রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ‘স্টেট লেভেল অ্যাডভাইজারি কমিটি অন ফুড সেফটি’ নিয়ে শুক্রবার নবান্নে (Nabanna) একটি বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। ওই বৈঠকে রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তর এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠক থেকে একাধিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট জানানো হয়েছে খাদ্যের গুণগত মান নির্ধারণের জন্য কোন আপোষ করা হবে না।

রিপোর্ট বলছে এই মুহূর্তে খাদ্যের গুণগত মানের নিরিখে সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে পঞ্চম স্থানে। যদিও রাজ্য সরকার এই ক্ষেত্রে এবার একেবারে শীর্ষস্থান দখল করতে উদ্যোগী হয়েছে। তা নিশ্চিত করতে আরও কি কি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি এদিনের বৈঠকে সেই পরিকল্পনাই চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে খবর।

নজরদারি এবং সচেতনতার বিষয়ে গুরুত্ব:

নবান্ন (Nabanna) সূত্রে খবর, খাদ্য ও পানীয়ের গুণমান রক্ষার জন্য মূলত দুটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। প্রথমত, কঠোর নজরদারি। খাদ্যে ভেজাল বা নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার পুরোপুরি রোধ করার পাশপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে যাতে স্বাস্থ্যগত কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা হবে। জানা যাচ্ছে, মূলত এটাই ছিল নবান্নের ওই বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য।

আরও পড়ুন: ‘‌খেলা হবে’‌! রাজ্যের চিকিৎসকদের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার

আগামীদিনে এই নজরদারি নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক পরিকাঠামোকে কাজে লাগানো হবে। খাবার ও পানীয় পরীক্ষার ব্যবস্থা আরও দ্রুত ও কার্যকর করতে রাজ্যের হাতে থাকা প্রায় ৩০ টি ‘ল্যাবরেটরি অন হুইল’ বা ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষাগারগুলিকে আরও সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করতে হবে। আগামীদিনে এগুলি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে তাৎক্ষণিক পরীক্ষার মাধ্যমে খাদ্যের মান যাচাই করবে।

Nabanna

জানা যাচ্ছে খাদ্য দফতর ছাড়াও, এই উদ্যোগে স্বাস্থ্য দফতর, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরও নিজস্ব পরীক্ষাগারগুলি ব্যবহার করবে। খাদ্য ও পানীয়ের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য প্রতিটি জেলায় নির্দিষ্ট কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। খাদ্যে ভেজাল রোধের পাশাপাশি, খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যা প্রতিরোধের প্রচারও চলবে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে তুলে ধরা হবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দিয়েও জনসাধারণকে নিয়মিত সচেতন করা হবে।

প্রসঙ্গত, করোনার পর থেকেই বেড়েছে অনলাইন ফুড ডেলিভারি এবং ক্লাউড কিচেনের জনপ্রিয়তা। এখনকার দিনে এই পরিষেবার গুণমান নিয়ন্ত্রণ করাও বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে বেসরকারি বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে যে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়, এবার সেগুলির গুণগত মান কতটা বজায় থাকছে এবার তা যাচাই করতে চাইছে রাজ্য সরকার।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর