বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আবার শিরোনামে সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer)। এবার মালদহে (Maldah) দাবি মতো ‘তোলা’ না দেওয়ায় এক লরি চালককে ক্যাম্পে ঢুকিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল তিন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় আরও অভিযোগ, প্রায় চোর পেটানোর মতো বেধড়ক মারধোর করা হয়েছে ওই ট্রাক চালককে। অভিযোগ, তাঁকে নাকি আউটপোস্টের মধ্যে ঢুকিয়ে চৌকির উপর ফেলে পেটানো হয়েছে।
নবান্নের নির্দেশে ক্লোজ করা হল ৩ সিভিককে (Civic Volunteer)
জানা যাচ্ছে ট্রাক চালকের সহকর্মীরা গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং করে রেখেছিলেন। সেই ভিডিও নিমেষে ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। একে একে ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেন সবাই। এই সিভিক (Civic Volunteer) পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে দাদাগিরি, তোলা আদায়ের মতো অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় বাস্তবে যা ঘটে তার তুলনায় ভিডিওতে দেখা ছবি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রেও তেমনই ঘটে। মনে করা হচ্ছে লরি চালকের ওপর ওই তিন সিভিকের অত্যাচারের ঘটনাই ব্যাপক ভাবে সিভিক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-অসন্তোষে অক্সিজেন জোগাতে শুরু করে।
নবান্ন সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে সব দিক বিবেচনা করে তিনজন সিভিক ভলান্টিয়ারকেই ক্লোজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথমে নাকি তাদের শোকজ করার চিন্তাভাবনা করেছিল জেলা পুলিশ। কিন্তু পরে তিন জনকেই ক্লোজ করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইজি উত্তরবঙ্গ রাজেশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘ঘটনার কথা আমরা জানি। সিরিয়াস অভিযোগ রয়েছে। এসপি গোটা ব্যাপারটা দেখছেন। ওদের ক্লোজ করা হয়েছে। ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত সাম্প্রতিক অতীতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনা থেকে আরজি কর—এই সিভিক ভলান্টিয়ারদের (Civic Volunteer) নিয়ে একাধিকবার অস্বস্ত্বিতে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। কিছুদিন আগেও দেখা গিয়েছে, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর পরিবারের সদস্যকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। সেই ঘটনা থেকেই সিভিকদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল নবান্নের।
আরও পড়ুন: ডবল অ্যাকশন! মামলা ফিরতেই বড় নির্দেশ দিল হাইকোর্ট, বিপাকে এই সব ‘হেভিওয়েট’!
মালদহের ঘটনায় রুহুল আলি নামে ওই লরি চালকের অভিযোগ, উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থেকে লরিতে করে গরু নিয়ে তারা হরিশ্চন্দ্রপুরের মারাডানগি এলাকায় আসছিলেন। তখনই সিভিক ভলেন্টিয়াররা হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেলা বাড়ি নাকা চেকপোস্টের সামনে গাড়িটি দাঁড় করান। এরপর তাদের কাছে তোলা বাবদ হাজার টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তারা কম টাকা দিতে চাওয়ায় কলার ধরে ক্যাম্পে ঢুকিয়ে ব্যাপক মারধর শুরু করে দেয়।
নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়,’আরজি কর কাণ্ডের পরবর্তী সময়ে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যাপারে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। তারপরও জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে এই ধরনের জুলুমবাজির অভিযোগ উঠছে।’ ওই শীর্ষকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ও একাংশের বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ হতে পারে।