বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভুল করে তৃণমূল নেতার স্ত্রীয়ের কাছে চলে গিয়েছিল ফোন আর তার ফল যে এত মারাত্মক হবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি অমিত দেবনাথ (Amit Debnath) নামে নদিয়ার (Nadia) এক যুবক। পরবর্তীতে তৃণমূল কর্মীরা তাকে বেধড়ক মারধর করলে অপমানে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করে বসে সে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।
সূত্রের খবর, গত শনিবার বন্ধুকে ফোন করতে গিয়ে ভুলবশত সেই ফোনটি চলে যায় তৃণমূল নেতা সঞ্জীব সমাদ্দারের স্ত্রীয়ের কাছে। আর এ ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে ওই তৃণমূল নেতা। পরবর্তীতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ডেকে নিয়ে এসে ওই যুবককে বেধরক মারধর করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, এরপর গতকাল সকালে ফের একবার অমিতকে মারধর করে তৃণমূল কর্মীরা। এক্ষেত্রে বারংবার ধরে ক্ষমা চেয়েও হয়নি শেষ রক্ষা। এমনকি, ওই যুবকের মা গিয়ে ক্ষমা চাইলেও মেলেনি কোন ফল! আর শেষ পর্যন্ত অপমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে বসে অমিত। এই ঘটনাটি সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসীরা।
নদিয়ার স্বরূপগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকান্ত পল্লী এলাকার এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। পরবর্তীতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় এলাকাবাসীরা। স্থানীয়দের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য পাড়ায় সর্বদাই দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াত সঞ্জীব সমাদ্দার। এমনকি, তার মুখের ওপর কথা বলার সাহস পর্যন্ত ছিল না গ্রামবাসীদের। তবে বর্তমানে যুবকের আত্মহত্যার খবর সামনে আসতেই সহ্যর বাঁধ ভেঙেছে সকলের।
এদিন পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে পালাতে সাহায্য করেছে পুলিশ। সেই কারণে থানায় খবর দিয়ে আসা হলেও দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়ে তারা। ইতিমধ্যেই যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে অবশ্য ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
সম্পূর্ণ ঘটনা প্রসঙ্গে এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতি বলেন, “এই ঘটনা প্রসঙ্গে আমি বিশেষ কিছু জানি না। তবে এক্ষেত্রে যদি সঞ্জীব সমাদ্দার এবং তার লোকজন জড়িত থেকে থাকে, তাহলে দল কখনোই তাদের সমর্থন করবে না।”
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে অমিতের পরিবারে। মৃতের মা বলেন, “আমার ছেলে ভুল করেই ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রীকে ফোন করে বসে আর তারপর ওরা বাড়িতে এসে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর একাধিকবার ক্ষমা চাওয়া হলেও বেধরক মারধর করে আর শেষ পর্যন্ত অপমানের কারণে গলায় ফাঁস দেয় অমিত।”