বাংলাহান্ট ডেস্ক: আড়াই বছর হয়ে গিয়েছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি হারিয়েছে ইরফান খানকে (irrfan khan)। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল ইন্দ্রপতন হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ে জিত হয় মারণ রোগেরই। কিন্তু অভিনেতা এবং ব্যক্তি ইরফান এখনো জীবিত রয়েছেন সিনেপ্রেমীদের মননে। বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি কয়েকটি টেলিভিশন শো এবং ছবিতে পার্শ্বচরিত্রেও অভিনয় করেছেন ইরফান।
এই তালিকায় অন্যতম নাম ‘মকবুল’। ইরফানের কেরিয়ারের শুরুর দিককার ছবি এটি। পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ শেক্সপিয়ারের কালজয়ী নাটক ‘ম্যাকবেথ’কে ভারতীয় ছবির রূপ দিয়েছিলেন। অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন ইরফান। মিয়াঁ মকবুলের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। নাসিরুদ্দিন শাহ (naseeruddin shah), ওম পুরি, পঙ্কজ কাপুর, তব্বুর মতো তাবড় অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন ইরফান।
অথচ যে ছবিতে এত অসাধারন অভিনয় করেছিলেন ইরফান সেই ছবিতে নাকি প্রথমে তাঁকে নেওয়ার কথা ছিল না। ইরফানের জীবনী থেকে জানা যায়, প্রথমে নাকি মিয়াঁ মকবুলের চরিত্রটি নাকি কে কে মেনন বা কমল হাসানকে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন। মূলত ‘হাসিল’ ছবিতে ইরফানের অভিনয় দেখেই তাঁকে এই ছবিতে নেওয়ার কথা ভাবেন পরিচালক। এই ছবির মাধ্যমে বড় ব্রেক পেয়েছিলেন তিনি।
নাসিরুদ্দিন শাহ জানিয়েছিলেন, ইরফানকে এই চরিত্রে নেওয়াটা ছিল মোক্ষম চাল। শুটিংয়ের সময়কার কথা বলতে গিয়ে একটি দৃশ্যের স্মৃতিচারণা করেন নাসিরুদ্দিন। রিহার্সালের সময় একটি দৃশ্যে ইরফান প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন। অভিনেতার পেছনেই দাঁড়িয়েছিলেন নাসির। তিনি হাত বাড়িয়ে ইরফানকে ধরতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, “নাসির ভাই আমি অভিনয় করার চেষ্টা করছি। আপনি আমাকে সাহায্য কেন করছেন?”
নাসিরুদ্দিন জানান, তিনি হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। এমন বাস্তববাদী অভিনয় করতে আগে কাউকে দেখেননি তিনি। হাসিল ও মকবুলের পর সবার নজর কেড়ে নিয়েছিলেন ইরফান। তথাকথিত ‘তারকা’দের নিজের অভিনয় দিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কাজের মধ্যে ডুবেছিলেন। ইরফানের অকাল প্রয়াণে ভারতীয় সিনেমা যে অনেক কিছু হারালো তা বলার অপেক্ষা রাখে না।