বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার নির্বাচনের ফল ঘোষনা হতে না হতেই বিরোধীরা সবচেয়ে বড় যে ইস্যুতে সরব হয়েছিল, তা ছিল ভোট পরবর্তী হিংসা (post poll violence)। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ভোটের পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও (NHRC)৷ পুলিশকে অপদার্থ বলে কটাক্ষ করতেও পিছপা হয়নি তারা। প্রায় দুহাজার অভিযোগ জমা করার পরেও এফআইআর নেওয়া হয়েছে মাত্র এগারোশোর কিছু বেশি। তার মধ্যেও বেশিরভাগ অভিযুক্তই এখন জামিনে মুক্ত।
এই ঘটনা নিয়ে এর আগেই রীতিমতো কটাক্ষ করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এবার তাদের হাইকোর্টকে (Kolkata High Court) দেওয়া রিপোর্টেও ধরা পড়ল পুলিশের অপদার্থতার চিত্র। তদন্তে যে তারা প্রচুর নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ পেয়েছেন তা জানাতে দ্বিধা করেননি তারা। সাথে সাথেই জানানো হয়েছে বাংলার বেশকিছু অঞ্চলের জনঘনত্ব যথেষ্ট বেশি, কিন্তু সেইসব এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ নেই। কার্যত কাজ চলছে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে। যাদের মাইনে ১০ হাজারেরও কম, ঠিকঠাক প্রশিক্ষণ অবধি নেই। যদিও স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় তাদের কাছে এলাকার খবর ভাল ভাবেই থাকে। কিন্তু কার্যত তেমনভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবার ক্ষমতা তাদের নেই।
বেশ কিছু জায়গার কথা উল্লেখ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দেখিয়েছে যেখানে সব মিলিয়ে ১৬ জন মহিলা ও পুরুষ পুলিশ কনস্টেবল রয়েছেন। সেখানে সিভিক পুলিশের সংখ্যা ১৭০। যদিও সিভিক পুলিশের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে একথা মেনে নিয়েছে এন এইচ আর সি, কিন্তু শাসক দলের কর্মীরাই বেশি সুযোগ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে এমন অনেকের উল্লেখ করা হয়েছে যারা অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অথচ চাকরি করছেন সরকারি আধিকারিক হিসেবে। মহম্মদ আলম নামে ফালতা থানার এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া রিপোর্টে বারবারই সমালোচনা করা হয়েছে বাংলার পুলিশের। এমনও জানানো হয়েছে, সাধারন গরিব মানুষ পুলিশের ওপর আস্থা হারিয়েছে। তারা এতটাই নিষ্ক্রিয় যে কার্যত নীরব দর্শক বললেও ভুল বলা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে আবার এও দেখা গিয়েছে শাসকদলের কোন কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে উল্টে তাকেই মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এখন আগামী দিনে কমিশনের এই রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় কতখানি প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার।