বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিস্ফোরক তথ্য পুলিশের হাতে! গতমাসে ভাঙড়ে অশান্তির দরুন কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন আইএসএফ (ISF) নেতা তথা বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Naushad Siddique)। বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছে নওশাদ সহ আরও অনেকেই। এই মধ্যে গুরুতর অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে। নওশাদের সাথে বিজেপির (BJP) শীর্ষনেতার স্পষ্ট যোগাযোগের হদিস পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, তার সঙ্গে বিজেপির এক শীর্ষনেতার হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) চ্যাটে উঠে এসেছে ঠিক এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশি সূত্রে খবর, তাদের হাতে নওশাদের হাওয়ালার টাকার লেনদেন-সহ বেশ কিছু অনিয়ম প্রকাশ্যে এসেছে। সামনে এসেছে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতার সঙ্গে তার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। যেই সূত্রে মারফত জানা যাচ্ছে, কোনো এক বিজেপি নেতা তরফে ভোটের আগে নওশাদকে বেশ কয়েকজন রাজ্য আধিকারিকের নামে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। এই চ্যাট সামনে আসতেই শুরু রাজনৈতিক তরজা।
এই বিষয়ে আলিপুর বডিগার্ড লাইনে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, যেসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি হাতে এসেছে, বর্তমানে সেগুলির ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। অন্যদিকে গোয়েন্দা সূত্রে খবর, নওশাদের বেশ কিছু চ্যাট মুছে ফেলা হয়েছে। সেসব চ্যাট ফের উদ্ধার করে রহস্য উন্মোচনের জন্য নওশাদ সিদ্দিকির দু’টি মোবাইল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে বিজেপির শীর্ষনেতার পাশাপাশি আরও একাধিক গেরুয়া নেতার সঙ্গে ফোনে চ্যাট হয় সহ নওশাদের। সেই চ্যাটের সূত্র ধরে জানা যায়, সেই সময়বিধায়ককে বিজেপির এক শীর্ষনেতা বলেন, ভোটের আগে নির্বাচনের সাথে যুক্ত রাজ্যের কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ হবে। পাশাপাশি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি দিল্লিতে গিয়ে গোটা বিষয়টি উপস্থাপন করবেন।
সুতরাং, ভোট পূর্বে যেসব প্রশাসনিক ও পুলিশকর্তাদের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সরানো হয়েছিল, সেই ঘটনার পেছনেও নওশাদের কোনও সুপারিশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি হাওয়ালার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। সেই নিয়েও শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত।
নওশাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চর্চা। এই নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘বিজেপির শীর্ষ নেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চালাচালি হয়েছে। তদন্তে সব তথ্য সামনে আসবে। ধর্মগুরুর সত্তাকে কেউ যেন অন্য কাজে ব্যবহার না করে। আইএসএফের সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতার পিরিত নিয়ে তদন্ত করা উচিত।’’
অন্যদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা বলেন, ‘‘বিধানসভায় আমাদের মুখ্য সচেতকের সঙ্গেও নওশাদের কথা হয়। অন্য কেউ কথা বলে থাকলে বেশ করেছে। বিজেপির শীর্ষনেতারা নিশ্চয়ই বলেছেন, মানুষকে পথে নামাও, প্রতিবাদ করো।’’