বাংলা হান্ট ডেস্ক: এমনিতেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কিংবা একের পর এক পরীক্ষা বাতিলকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এরইমধ্যে সর্বভারতীয় মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট (NEET) দিতে গিয়ে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছিলেন বাংলার এক পরীক্ষার্থী। তাঁর নাম ফিয়োনা মজুমদার।
ওই পরীক্ষার্থীর অভিযোগ পরীক্ষা হলে তাঁর হাতে আসে একটি ছেঁড়া ওএমআর শিট (OMR Sheet)। কিন্তু সেই উত্তরপত্র বদলে দিতে বলা হলে তার থেকে সেই উত্তরপত্রটি নিয়ে তাকে টানা দেড় ঘন্টা পরীক্ষা হলে বসিয়ে রাখা হয়। এবং শেষে জানানো হয় ওই ওএমআর শিট আর বদলানো যাবে না। এবং তাকে ওই ওএমআর শিটেই পরীক্ষা দিতে হবে।
এই বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ফিয়োনা। সেখানে তিনি জানিয়েছেন দেড় ঘন্টা বসিয়ে রাখার পরেও নাকি তাঁকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়নি। তাই ওই সামান্য সময়ের মধ্যেই তাকে পরীক্ষা শেষ করতে হয়েছিল। তাই পরীক্ষা পরিচালনকারী সংস্থা এনটিএ-র কাছে আরও একবার পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়েছিলেন ফিয়োনা। কিন্তু এনটিএ-র তরফ থেকে কোন সাড়া মেলেনি।
তাই শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই গোটা বিষয়টা কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জানিয়ে ফিরোনা অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে পরীক্ষা দেওয়ার আরোও একটা সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু তার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এনটিএ দাবি করেছেন ওই পরীক্ষার্থী যা বলছেন তা সত্য নয়। প্রসঙ্গত শুক্রবার ওই পরীক্ষার্থীর মামলাটি উঠেছিল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের (Joy Sengupta) এজলাসে।
আরও পড়ুন: ৪ দিনের মধ্যে … ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের! থরহরিকম্প রাজ্যে
সেখানে এনটিএ-র বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে, তাদের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়,’ওই ওএমআর স্ক্যান করা হয়ে গিয়েছিল বলে বদলানো যায়নি। তবে পরীক্ষার্থী ছেঁড়া ওএমআরশিটের যে অভিযোগ এনেছেন, তা অসত্য। ওই ওএমআরের উপরের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মাত্র। তা ছাড়া তাঁকে দেড় ঘণ্টা হলে বসিয়ে রাখার অভিযোগও সত্যি নয়। বড়জোর কয়েক মিনিট সময় নষ্ট হয়েছিল তাঁর।’
যদিও এনটিএ-র এই বক্তব্য যাচাই করার জন্য বিচারপতি সেনগুপ্ত পরীক্ষা হলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান। আর শুক্রবার সেই ফুটেজে দেখা যায় পরীক্ষার্থী দীর্ঘ ক্ষণ পরীক্ষার হলে পরীক্ষা না দিয়ে বসে রয়েছেন। আর সেই সময়টা কয়েক মিনিট নয় বরং দেড় ঘণ্টাই।
এদিন সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণ দেখানোর পর ওই পরীক্ষার্থীর আইনজীবী কল্লোল প্রশ্ন করেন, সেদিন কেন পরীক্ষার্থীকে দেড় ঘণ্টা ধরে হলে বসিয়ে রাখা হয়েছিল? এ বিষয়ে আদালত রায় জানাবে শুক্রবার সন্ধ্যায়। নজিরবিহীন এই মামলার রায় জানানোর জন্য ভর সন্ধ্যায় বসছে কলকাতা হাইকোর্ট।