বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নেপালের (Nepal) ভারত (India) বিরোধী মনোভাব বারবার সামনে আসছে। নতুন রাজনৈতিক নকশায় উত্তরাখণ্ডের তিনটি এলাকাকে নিজেদের বলার পর প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (KP Sharma Oli) নেপালে বিয়ে করা ভারতীয় মেয়েদের নাগরিকতা নিয়মে বদল আনার প্রসঙ্গ তুলেছিল। এবার ওলি সংসদে হিন্দি ভাষায় নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রী ওলির এই প্রস্তাবকে উগর রাষ্ট্রবাদ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। একদিকে করোনার, আরেকদিকে একের পর এক জমি দখল করে যাচ্ছে চীন, আর সেসব ইস্যু থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে বারবার ভারত বিরোধিতা করে চলেছে নেপাল।
যদিও সংসদে এই প্রস্তাব পেশ হওয়ার পর নিজের দলের সাংসদেরাই প্রধানমন্ত্রী ওলির বিরোধিতা শুরু করে দেন। আর তাঁর প্রধান কারণ হল, নেপালের প্রচুর সংখ্যক মানুষ হিন্দি বলেন। বিশেষ করে তরাই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে হিন্দি বলার প্রবণতা বেশি। এছাড়াও ভোজপুরী, মৈথলিতেও কথা বলে নেপালিরা।
নেপালের তরাই এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা হিন্দি বলেন। ২০১১ সালে নেপালের জনগণনার সময় এই কথা সামনে আসে। ভারতের সীমান্তের পাশের এলাকা গুলোতে ৭৭ হাজার ৫৬৯ জন নেপালি বসবাস করে। এই সংখ্যা নেপালের জনসংখ্যার ০.২৯ শতাংশ। এছাড়াও নেপালের অন্যান্য অংশের নেপালিরাও হিন্দিতে কথা বলায় অভ্যস্ত। আর এই কারণে ভারত আর নেপালের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো হয়েছে এবং দুই দেশের বাসিন্দা একে অন্যের দেশে এতদিন অবাধেই যেতে পারত।
একদিকে নেপালে হিন্দি বেশ জনপ্রিয়। আরেকদিকে ভাষা নিয়ে নেপালে আগেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। নেপালের প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি পরমানন্দ ঝাঁ ২০০৮ সালে হিন্দি ভাষায় শপথ নিয়েছিলেন, আর এর ফলে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। নেপালের রাস্তায় বিরোধী দলের নেতা এবং নেপালিরা অনেক বিক্ষোভ দেখায়। উপ রাষ্ট্রপতির বিরোধিতায় দেশের রাস্তায় অনেকদিন মানুষের ঢল নামে এবং উপ রাষ্ট্রপতির কুশপুতুল পোড়ায়।
মানুষের বিক্ষোভ দেখে নেপালের আদালত রায় দেয় যে, হিন্দিতে শপথ গ্রহণকে আর বৈধতা দেওয়া হবেনা। এরপর ২০০৯ সালে পরমানন্দ ঝাঁ আবারও নেপালি ভাষা আর নিজের মাতৃভাষা মৈথলিতে শপথ নেন। তখন এই বিতর্ক শেষ হয়।