বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ উদ্ধারের পাশাপাশি একাধিক অন্যান্য সম্পত্তি মিলেছে। আর এর পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করে স্কুলে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হতো বলে অভিযোগ তুলেছে অনেকেই। বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) মহিষাদলের বাসিন্দা দেবপ্রসাদ সেনী নামে এক ব্যক্তির একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
উল্লেখ্য, স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের নাম করে সকল দুর্নীতি করতেন ওই ব্যক্তি, বর্তমানে এহেন গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে দেবপ্রসাদের বিরুদ্ধে। এমনকি, এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের অনেকেই অভিযুক্তকে চিনতো বলেই জানা গিয়েছে। গত শুক্রবার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেবপ্রসাদ জানায়, “প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে একাধিক স্কুলে বহু মানুষকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলার একাধিক জেলায় এরকম ২০ থেকে ২৫ জন মানুষ শিক্ষকতা করে চলেছে।” তবে এরপরেই উধাও হয়ে যায় অভিযুক্ত।
মহিষাদলে পরিবারকে নিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে দেবপ্রসাদ। এলাকায় তার একাধিক বাড়ি এবং সম্পত্তি রয়েছে বলেও দাবি অনেকের। তবে বর্তমানে টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে চাকরিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি বহু মানুষের থেকে টাকা হাতানোর মত গুরুতর অভিযোগ, যা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। এক স্থানীয়ের দাবি, “সম্প্রতি টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য ফোন করেছিলাম। তবে উনি বললেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেল থেকে বেরোলে তবেই নাকি টাকা দেওয়া সম্ভব হবে। তবে এরপর যখন আবারো জিজ্ঞাসা করি, তখন ও আমায় টাকা দেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত জানালেও পরবর্তীতে এলাকা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে।”
শুধু ওই ব্যক্তি নয়, এছাড়াও এলাকায় আরো অনেক মানুষের থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেবপ্রসাদের বিরুদ্ধে। অতীতে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের করা হয়। এ ঘটনা প্রসঙ্গে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, “এলাকায় ওর নাকি একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। বহুদিন ধরেই টাকার বিনিময়ে বহু মানুষকে বেআইনিভাবে চাকরি দিয়ে চলেছে, এরকম বহু অভিযোগ শুনেছি।” তবে এক্ষেত্রে দুর্নীতির সাথে নাম জড়িয়ে থাকলেও কেন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এ বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন চিহ্নে উঠে গিয়েছে।