বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শহরের একাধিক প্রান্তে লেগেছে পোস্টার! সর্বত্র নতুন তৃণমূল গড়ার আহ্বান দিয়ে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, অথচ পোস্টারে নেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছবি। বরং সেখানে প্রতিটি স্থানে জায়গা পেয়েছে তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কাট আউট। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে নয়া বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। বিশেষত, পোস্টারে উল্লেখিত বার্তা সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে হাজরা থেকে রাসবিহারী এবং কলকাতার অন্যান্য একাধিক স্থান তৃণমূল কংগ্রেসের পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে। আশ্রিতা ও কলরব সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া পোস্টারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সহ লেখা, “আগামী ছয় মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল, ঠিক যেমন সাধারণ মানুষ চায়।’ ‘চলুন, লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হউন’ তবে এ সকল পোস্টারগুলিতে কোথাও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি চোখে পড়েনি আর এ প্রসঙ্গেই বিতর্ক বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি একের পর এক দুর্নীতি মামলায় অস্বস্তি ক্রমশ বেড়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের। পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের মামলায় বিরোধীদের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে শাসকদল। এর মাঝেই লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন মজবুত করতে তৎপর ঘাসফুল শিবির। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্নীতিকে পিছনে ফেলে জনসাধারণ মাঝে পুনরায় একবার বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তুলতে তৎপর শাসক দল। এ প্রসঙ্গে অতীতেও একাধিক সমাবেশ এবং কর্মীসভায় দলের স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তির কথা তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে তাঁর বার্তা, “স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তি থাকলে তবেই দলে স্থান পাবেন। যদি কারোর বিরুদ্ধে কোনরকম দুর্নীতি ধরা পড়ে, তবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার কথা দুবারও ভাবা হবে না।”
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক কিংবা অন্যান্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, সর্বদাই সামনের সারিতে থাকতে দেখা গিয়েছে অভিষেককে। এমনকি বিরোধীদের এও দাবি যে, বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম অভিষেক নামে দুটি দল তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর মাঝে বর্তমানে পোস্টারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থানে অভিষেকের ছবি ব্যবহার সেই জল্পনাই আরও উস্কে দিলো।
যদিও তৃণমূলের দাবি, বাংলার মানুষের কাছে উন্নয়নমূলক কাজ এবং স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তি পৌঁছে দেওয়াই দলের লক্ষ্য। এক্ষেত্রে দুর্নীতিকে দূরে সরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে যে সকল উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে, সেগুলি পৌঁছে দেওয়া হবে মানুষের কাছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “পোস্টারে কে রয়েছে কিংবা কে দিয়েছে, সেটা পরের কথা। আমরা মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে তুলতে চাইছি। সেই কারণেই এ পোস্টারগুলির মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”