বাংলাহান্ট ডেস্ক : গতকালই দ্বিতীয় বারের জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। ৫২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়েছে তাঁর মন্ত্রীসভা। সেই মন্ত্রীসভাতেও রয়েছে একের পর এক চমক। অনেক নতুন মুখকেও এবার দেখা যাচ্ছে যোগীরাজ্যের দায়িত্বে। সেরকমই একজন রাকেশ রাঠোর গুরু। সীতাপুর আসন থেকে জয়ী হয়ে প্রথমবারেই বিধায়কের পাশাপাশি মন্ত্রীসভাতেও তিনি অর্জন করে নিয়েছেন নিজের আসন। তবে একজন স্কুটার মেকানিক থেকে রাজ্যের মন্ত্রী, ঠিক কীরকম ছিল রাকেশ রাঠোর গুরুর সফর? আসুন সেরে ফেলা যাক ঝাঁকিদর্শন
অতি সাধারণ পরিবার থেকেই উঠে এসেছেন এই বিজেপি নেতা। জানা যায় যে, একটা সময় সংসার চালানোর জন্য গ্যারেজে স্কুটার মেকানিকের কাজও করেছেন তিনি। জীবন যুদ্ধের পাশাপাশি চলেছে রাজনীতিও। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সীতাপুর কেন্দ্র থেকে তাঁকে টিকিট দেয় দল। কিন্তু সেই টিকিট পাওয়ার পরও তাঁকে সম্মুখীন হতে হয়েছে চূড়ান্ত বিতর্কের। নাহ এই বিতর্কে অবশ্য কোনও দোষই ছিল না তাঁর।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সীতাপুর সদর কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন রাকেশ রাঠোর। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি গেরুয়া শিবির ত্যাগ করে যোগ দেন সমাজবাদী পার্টিতে। আর এই থেকেই সূত্রপাত বিতর্কের। সীতাপুরের মানুষ একই নামের কারণে গুলিয়ে ফেলেন রাকেশ রাঠোর এবং রাকেশ রাঠোর গুরুকে। দ্বিতীয় জনকে যিনি কিনা প্রথম বারের জন্য প্রার্থী হয়েছেন এবার তাঁকে প্রথম জন ভেবে চলতে থাকে তুমুল বিতর্ক এবং হইচই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব বিতর্ক পেরিয়েই সীতাপুর সদর কেন্দ্র থেকে জয় ছিনিয়ে আনেন রাকেশ রাঠোর গুরু।
এই জয়ের এবং মন্ত্রী হিসেবে নাম ঘোষণা হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী এবং দলকে অগণিত বার ধন্যবাদ জানিয়েছেন গুরু এবং তাঁর পরিবার। তাঁর এহেন জয়ে খুশীতে আত্মহারা সীতাপুর বাসীরাও। একজন অতি সাধারণ মানুষ এভাবে মন্ত্রী হলেন তাতেই খুশী এলাকার বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, বর্তমানে একটি ব্যাটারির দোকানের মালিক গুরু। তবে রাজনৈতিক কাজকর্মের কারণে এখন দোকানটির দেখভাল করছে তাঁর ভাইই।
অন্যদিকে মন্ত্রীসভার আরেক নতুন সদস্যের কথা না বললেও চলে না। যোগী ২.০ মন্ত্রীসভার একমাত্র মুসলিম সদস্য ড্যানিশ আজাদ আনসারির বাবা একজন তাঁতি। অতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন তিনিও। দীর্ঘদিন ধরেই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গে যুক্ত থাকার পর এবার বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকেও টিকিট দেয় দল। তাঁর কারণেই ড্যানিশের গ্রামের সংখ্যালঘু সমাজ এবং যুব সমাজে বিপুল পরিমাণ ভোট পায় বিজেপি।
এবার বিধানসভা নির্বাচনে ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ মন্ত্র নিয়েই লড়তে নেমেছিল বিজেপি। সেই কারণেই সমাজের প্রতিটি শ্রেণি এবং প্রতিটি বর্ণের মানুষকেই সুযোগ দিয়েছে তারা। বিজেপির জেলা সভাপতি অচিন মেহরোত্রা জানিয়েছেন, ‘বিজেপিতে পরিবারতন্ত্র নেই। সমস্ত সাধারণ কর্মীর সুযোগ পান এখানে।’ বিরোধীরা বরাবরই জাতি ধর্ম বর্ণের প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণ হানতে চেয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তবে যোগীর এবারের এই ‘মাস্টারস্ট্রোক’ যে কিছুটা হলেও এই বিতর্কে জল ঢালল তা বলাই বাহুল্য।