রেকর্ড অষ্টমবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নীতিশ কুমার, পিছনে ফেললেন জ্যোতি বসুকেও

বাংলাহান্ট ডেস্ক : চল্লিশ বছরের কেরিয়ারে এর আগেও মোক্ষম সময়ে অন্তত চার বার শিবির বদলে বিহারের রাজনীতির মোড় বদলে দিয়েছেন নীতীশ (Nitish Kumar)। সাতবারের মুখ্যমন্ত্রী (Bihar Chief Minister) তথা অটল-জমানায় কৃষি, রেল-সহ একাধিক মন্ত্রক সামলানো নীতীশ। কিন্তু, কী যেন এক ম্যাজিকে কুর্সিটা মোটামুটি তাঁর সঙ্গেই সেঁটে রয়েছে বরাবর। এবার অষ্টমবারের জন্য শপথ। জোটসঙ্গী পুরনো সঙ্গী আরজেডি এবং বাম-কংগ্রেস-এর (Mahagathbandhan government)। দরকষাকষিতে তেজ তেজস্বী (Tejashwi Yadav) বিহারের ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী।

নীতিশ কুমার প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন ২০০০ সালে ৩ মার্চ। কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠতার অভাবে মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে।এরপর ২০০৫ এবং ২০০৭ পরপর দুবার এনডিএ-জোটের মধ্যে থেকে তিনি দু বার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু ২০১৪ সালে বিজেপির বিরুদ্ধে খারাপ ফলাফলের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে। ২০১৫ সালে আবারও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালেই মহাজোট গড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন নীতিশ কুমার।

এরপর ২০১৭ সালে মহাজোট ছেড়ে আবারও এনডিএ শিবিরে যোগ দেন তিনি। ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে জেডিইউ কম আসনে জয়লাভ করলেও বিজেপির সাহায্যে নীতিশ কুমার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন।

মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়লেন নীতিশ কুমার। আজ পর্যন্ত মোট ৮ বার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন নীতিশ। দেখে নেওয়া যাক বাকি মুখ্যমন্ত্রীরা কে কোথায় আছেন।

বীরভদ্র সিংহ – হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৩, ১৯৮৫, ১৯৯৩, ১৯৯৮, ২০০৩, ২০১২- এই ৬ বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন।

জে জয়ললিতা – তামিলনাড়ুর ‘আম্মা’ নামেই পরিচিত দক্ষিণের এই অভিনেত্রী। ১৯৯১, ২০০১, ২০০২, ২০১১, ২০১৬-এই ৬ বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন জয়ললিতা।

পবন কুমার চামলিং – ভারতের সবচেয়ে বেশি দিন মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার রেকর্ড রয়েছে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী চামলিং – এর নামে। ১৯৯৪, ১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪ – এই পাঁচবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ দখল করেন তিনি।

জ্যোতি বসু – বাংলা প্রথম বাম মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। ১৯৭৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টানা মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। শপথ নেন ৫ বার।

আজ বুধবারই শপথ নিলেন নীতিশ কুমার। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরই নীতীশকে প্রণাম করতে এগিয়ে যান তেজস্বী। এদিন শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী, উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীর স্ত্রী রাজশ্রী এবং আরজেডি নেতা তেজপ্রতাপরা। শপথগ্রহণের পর বিহারের অষ্টমবারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ বলেন, ‘দলের সবাই মিলে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি থাকি বা না থাকি দলের বাকিরা কী চায় তা বলতেই পারে।’

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী বলেন, ‘যা হল বিহারের মানুষের ভালর জন্য হয়েছে। বিহারের মানুষকে ধন্যবাদ।’ উচ্ছ্বসিত তেজস্বীর স্ত্রী রাজর্ষিও। তাঁর ভাই তেজপ্রতাপ বলছেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করতে আমরা ক্ষমতায় এসেছি।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর