বাংলাহান্ট ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনা আতঙ্কে বিশ্বে এখন প্রায় অমৃত সমান হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (Hydroxychloroquin)। যা করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিশেষ সহায়ক হয়ে উঠছে। এমনটাই দাবি অনেক চিকিৎসকদের। এই সূত্রে ভারত-আমেরিকার ওষুধ যুদ্ধও শুরু হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। করোনা মুক্তির রাস্তা হিসেবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের চাহিদা যখন তুঙ্গে, তখন এই রাজ্যে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় (Acharya Prafullachandra Roy) প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল এই ওষুধ তৈরির ছাড়পত্র পেল। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল এই ছাড়পত্র বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দিল। বাকি সব ওষুধ বন্ধ করে শুধুমাত্র এই ওষুধ তৈরি করলে মাসে দেড় কোটি ওষুধ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা হবে বলে জানিয়েছে বেঙ্গল কেমিক্যাল কতৃপক্ষ।
এবার রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল হাইড্রোক্লোরকুইন তৈরীর ছাড়পত্র দিল বেঙ্গল কেমিক্যালসকে। কিছুদিন আগেই রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের কাছে এই ওষুধ তৈরীর অনুমতি চেয়েছিল বেঙ্গল কেমিক্যালস। এবার অনুমতি দেওয়া হল। ক্লোরকুইন ফসফেট এবং হাইড্রোক্লোরকুইনের রাসায়নিক গঠন প্রায় একই। শুধু হাইড্রোক্লোরকুইনে হাইড্রক্সির পরিমান বেশি থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচার হচ্ছিল যে, আমাদের বঙ্গের ঐতিহ্যবাহী ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা বেঙ্গল কেমিক্যালস নাকি-এর পথপ্রদর্শক। এখানেই নাকি তৈরি হয় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। এই খবর সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমে যে যে তথ্য মিলছে, তা কিছুটা বিভ্রান্তিকর। তবে আসল সত্য হল, বেঙ্গল কেমিক্যালসে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি হয় না, সামাজিক মাধ্যমের খবর ঠিক নয়। কুইনাইনের অন্য দুটি যৌগ– ক্লোরোকুইন ফসফেট (Chloroquin Phosphate) ও ক্লোরোকুইন সালফেটের (Chloroquin Sulphate) ট্যাবলেট তৈরি হয় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থায়, যা ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবে বহু যুগ ধরে ভারতবাসীর রোগ নিরাময় করেছে। এই সালফেট বা ফসফেট যৌগ সহজে দ্রাব্য হওয়ায় তা মানুষের শরীরে দ্রুত কাজ শুরু করে। তুলনায় হাইড্রক্সিক্লোরাকুইন শরীরে কার্যকর হতে কিছুটা সময় নেয়। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় যদি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সহায়ক হয়, তাহলে এই দুই ওষুধও কার্যকর হবে বলে জানাচ্ছেন অনেক চিকিৎসক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মেক ইন ইন্ডিয়া স্লোগান তুললেও বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড-এর কোনও পরিবর্তন হয়নি। কেন্দ্র এই সংস্থাটিকে তুলে দিতে চেয়েছে বেসরকারি সংস্থার হাতে। ওষুধ তৈরির বদলে সেখানে কারখানা চৌহদ্দিতে তৈরি হবে আবাসন। বাংলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহি সংস্থার বিলগ্নীকরণ রুখতে কর্মীরা দীর্ঘ লড়াই চালিয়েছেন। এখনও লড়াই চলছে।