বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় গত বছর থেকে জেলে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা তথা বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। নেতা জেলায় নেই বহুদিন হয়ে গিয়েছে। অনেকটাই বদল এসেছে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। জেলা কমিটিতে স্থান পেয়েছে কেষ্ট বিরোধীরা। সেই নিয়ে জোড় চৰ্চা। আর এবার তৃণমূলের কার্যালয় (TMC Party Office) থেকেও মুছে গেল অনুব্রত মণ্ডলের নাম, ছবি।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের (Birbhum) হোসেনপুর গ্রামে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। দলের কার্যালয়েই আবছা হয়ে গেল কেষ্টর বদন। শুক্রবার নানুরের হোসেনপুর ন-নগর কড্ডা তৃণমূলের পার্টি অফিসের দেওয়াল থেকে মুছে ফেলা হল জেলা তৃণমূল সভাপতির নাম ও ছবি।
প্রসঙ্গত, শাসকদলের ওই দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার মুখেই দেওয়ালে জ্বলজ্বল করত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের আঁকা ছবি। তবে আজ দেখা গেল সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকতেও মুছে দেওয়া হয়েছে কেষ্টর ছবি। হোসেনপুরের ওই কার্যালয়েরই অন্য একটি দেওয়ালে একদিকে লেখা ছিল ‘মমতা ব্যানার্জী জিন্দাবাদ’, আর তার পাশেই লেখা ছিল ‘অনুব্রত মণ্ডল কেষ্টদা জিন্দাবাদ’। সৌজন্যে হোসেনপুর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি। তবে এদিন সেই লেখাও মুছে ফেলা হল।
বর্তমানে দেওয়ালে ‘জিন্দাবাদ’ শব্দটি থাকলেও ‘অনুব্রত মণ্ডল কেষ্ট’ এই তিনটি শব্দ চুন দিয়ে মুছে ফেলা হয়েছে। যা নিয়ে চাপানউতর সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এসব নিয়ে কিছু জানেন না বলেই মন্তব্য করেছেন নানুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। এই বিষয়ে খোঁজ নেওয়ায় আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। তবে ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত।
আরও পড়ুন: কথা নয় এবার অ্যাকশন! নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে ED-র সহকারী ডিরেক্টরকে সরিয়ে দিলেন বিচারপতি
বীরভূমের ঘটনায় সুর চড়িয়েছেন বিজেপি নেতা তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। তিনি বলেন, “নানুরের ওই কার্যালয় থেকে কেষ্টবাবুর ছবি মুছে দেওয়ার ঘটনায় অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ নানুরে কোনও এক ব্যক্তি এখন বীরভূম তৃণমূল চালাচ্ছে। তিনি কেষ্টবাবুর আন্টি লবি। কেষ্টবাবু যখন পাওয়ারে ছিলেন তখন কাজল শেখকে কেষ্টবাবু উঠতে দেননি। কোনঠাসা করে রেখেছিলেন। এখন উনি জেলে।”
এরপরই তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “তৃণমূলের তো নিয়মই আছে যতদিন তুমি চুরি করে পার্টিকে দেবে ততদিন কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু একবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লেই পার্টি তোমাকে সরিয়ে দেবে। আজকে কেষ্টবাবুর ছবি মুছেছে। ওদিকে উনি তো তিহাড়ে ঢোকার পর থেকে নিজেই ছবি হয়ে গিয়েছেন। ”
বিজেপি নেতা আরও বলেন, ” নানুরে যিনি ব্লক সভাপতি আছেন সুব্রত ভট্টাচার্য, উনি তো কেষ্টবাবুর বড় ভক্ত ছিলেন, এখন হয়তো চাপে পড়েছেন। তবে খুব কষ্ট হলেও ওনাকে কাজল শেখকেই নেতা হিসেবে মেনে নিতে হবে। সবে তো হোসেনপুর থেকে ছবি মুছেছে, এবার আসতে আসতে গোটা বীরভূম থেকেই মুছে যাবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তো ওনাকে দল থেকে মুছে দিয়েছেন।”